কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রোববার সকাল ৬টার দিকে এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৬ কোটি ২০ লাখ টাকা অনুমান করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লগডাউনের কারণে দোকানপাট সব বন্ধ ছিল। রোববার সকাল ৬টার দিকে আগুনের প্রথম সূত্রপাত ঘটে। পরে মূহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ও ধোয়ায় যখন পুরো বাজারের আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে যায়, তখন আশপাশের লোকজন বাজারে ছুটে আসে। আগুনের ভয়াবহতা দেখে স্থানীয়রা দিশেহারা হয়ে পড়ে
। পরক্ষণে একাধিকবার চেষ্টা করার পর ফায়ার সার্ভিসকে বিষয়টি জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্র্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আগুনের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। ফলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর তারা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ততক্ষণে ২২টি দোকান ঘর সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।প্রায় দেড়শ’ বছরের পুরনো ওই বাজারটি নৌপথ ও স্থল পথের যোগাযোগের সুবিধা থাকায় নরসিংদী, বাঞ্ছারামপুর, নবীনগর, কসবা, হোমনা, মুরাদনগর ও দেবিদ্বার উপজেলার লোকজন পাইকারী মালামাল সুলভ মূল্যে নিতেন। তাঁত, পাট ও কুমার পল্লীর জন্য বিখ্যাত এ বাজারটি একাধিকবার চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বাজার নির্বাচিত হয়েছিল।
রামচন্দ্রপুর বাজার কমিটির সভাপতি জীবন মিয়া মেম্বার বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক আমরা পুড়ে যাওয়া দোকান মালিকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ও তালিকা করেছি। অগ্নিকান্ডে ৮টি মুদি দোকান, ৩টি মিষ্টি দোকান, ২টি বিস্কুটের দোকান, ১টি বেকারী, ১টি আখের গুড়ের গোডাউন, ৭টি অন্যান্য দোকানসহ মোট ২২টি দোকান ও দোকানে থাকা সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৬ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
মুরাদনগর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বিল্লাল হোসেন বলেন, আগুন লাগার খবরটি আমরা একটু দেরিতে পেয়েছি। তারপরও আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দীর্ঘ দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিক ভাবে বিদ্যুতের সর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, সকাল সাড়ে ৭টায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে ক্ষতিক্ষতির পরিমান ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা দেওয়ার জন্য বাজার কমিটি এবং স্থানীয়জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে।