জন্মের ৫ মিনিট পর শিশুর কথা বলার গুঞ্জবে তুলকালাম শহরজুড়ে।

বাংলাদেশ

কামরান সিলেট ছাতক,উপজেলা রিপোর্টারঃ-

জন্মের ৫ মিনিট পর এক শিশু বলেছে আদা, লং, গোলমরিচ ও কালোজিরা দিয়ে চা বানিয়ে খেলে মরণঘাতী করোনাভাইরাস হবে না। এ কথা বলার পরপরই শিশুটি মারা যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে এমন কথা ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে এ কথা। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা হৈচৈ। কেউ বলছেন শিশুটি বগুড়ায় জন্ম নিয়েছে, আবার কেউ বলছেন রংপুরে, কেউবা বলেছেন নীলফামারী-লালমনিরহাটের কথা।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম তার ফেসবুকে এমনি এক অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে লিখেছেন- আজ রাত ৯ টা ১০ মিনিটে আমার এক নিকটাত্মীয় ফোন করে বললেন, ‘বাবা সাইফুল, দ্রুত একটু আদা, কালোজিরা ও গুলমরিচ খেয়ে নেও’।

আমি বললাম, কেন খাব? তিনি বললেন, ‘বগুড়ায় একটা শিশু জন্মের পর বলেছে আদা, গুলমরিচ আর কালোজিরা খেলে করোনাভাইরাস হবে না। এই তিনটা কথা বলে শিশুটা মারা গেছে। এখনও শিশুটার জানাজা হয়নি। বগুড়ার সবাই এগুলো খাচ্ছে। আমরাও খাচ্ছি। তুমিও খেয়ে নাও’।

আমি বললাম, এটা গুজব। মিথ্যাচার। এগুলো ঠিক নয়। তিনি বুঝতে চাইলেন না। আমাদের গ্রামাঞ্চলে এভাবেই সহজেই গুজব ছড়ানো হয়। মানুষদের বোকা বানানো হয়। সতর্ক থাকুন, গুজবে কান দেবেন না। গুজব বড় ধরনের মিথ্যাচার, বড় ধরনের পাপাচার। গুজব ছড়াবেন না, গুজব বিশ্বাসও করবেন না।

শুধু সাইফুল নয়, এমন অনেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এমন ঘটনার কথা তুলে ধরে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। বিষয়টি যে নিছক গুজব তাতে কোনো সন্দেহ নেই-বলছেন রংপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,
তিনি বলেন, একটি মহল এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে থাকেন। এর আগেও নানা বিষয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে। এসবের বৈজ্ঞানিক বা ধর্মীয় কোনো ভিত্তি নেই। তাই গুজবে কান না দিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সকলকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

এ বিষয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তালক শাখাতী রিফুজি পাড়া জামে মসজিদের প্রাক্তন ইমাম ছমির উদ্দিন বলেন, আদা, লং বা লবণ দিয়ে আমরা এমনিতেই অনেক সময় চা খাই। ৪-৫ দিন আগেও এক পীর মারা যাওয়ার সময় এভাবে চা খেতে বলেছেন-এমনি এক গুজব ছড়িয়েছিল তার এলাকায়।

পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি মারা যাননি। তাই এসব নিছক গুজব ছড়ানো ছাড়া আর কিছুই নয় দাবি করে তিনিও সচেতন থেকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের কথা জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *