কোরানে ইলম শব্দটি 800 বার বলা হয়েছে এরপরেও মুসলিমরা শিক্ষায় পিছিয়ে কেন?

Uncategories

 

(লেখক-আসিফ ইকবাল)

আরবি ভাষায় (আরবি: علم‎‎, “ইলম”) শব্দটি দ্বারা জ্ঞান, অনুধাবন ও উপলব্ধি করা কে বোঝানো হয়। বাংলা ভাষায় কখনো কখনো এলেম শব্দটি দ্বারাও একে বোঝানো হয়, যার অর্থ হল; জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা বা বিদ্যা।

আমরা দেখি মুসলিমরা বিশ্বে শিক্ষা থেকে অনেক দূরে।বর্তমানে আমাদের শিক্ষার পেছনের সব থেকে বড় অধঃপতন হচ্ছে ।অথচ আপনি পবিত্র কোরআনুল কারীম যদি পড়েন ,কুরআন গবেষণা যদি করেন তাহলে দেখবেন কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইলম (এডুকেশন) শব্দটি 800বার তুলে ধরেছেন। এমনকি আল্লাহতালা কোরআন শুরু করেছেন ইকরা (যার অর্থ – পড়) দিয়ে এর পরেও আমরা দেখি মুসলিম সমাজ শিক্ষা থেকে অনেক দূরে ।কোরআনুল কারিমে Allah has used the words relating to ilma and education more than 800 times. জ্ঞানী, হাকিম এ ধরনের বেশকিছু শব্দগুলি আল্লাহতালা 800 বার ব্যবহার করেছেন কোরআনুল কারিমে।শুধু তাই নয় ইলম শব্দটি কুরআনে এসেছে 332 বার ।কিতাব অর্থাৎ গ্রন্থ কুরআনুল কারীমের 207বার । আলেম অর্থাৎ জ্ঞানী শব্দটা কুরআনুল কারীমে এসেছে 163 বার ।كتابه. অর্থাৎ লেখা এটা পঞ্চাশবার, হাকিম অর্থাৎ জ্ঞানী 97 বার কোরআনুল কারিমে ব্যবহার করা হয়েছে।এই শব্দগুলি যদি অর্থ করে দেখেন হাকিম, জ্ঞানী, জানে, বোঝে, পড়,পড়াও এই কথা গুলি আল্লাহতালা 800বার বলেছেন।আবার আমরা দেখি কোরআন শুরু হয়েছে ইকরা অর্থ পড় দিয়ে।সূরা আলাক্ক এ -আল্লাহ বলেছেন-96:1

 

اِقۡرَاۡ بِاسۡمِ رَبِّکَ الَّذِیۡ خَلَقَ ۚ﴿۱﴾

পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।

 

96:2

 

خَلَقَ الۡاِنۡسَانَ مِنۡ عَلَقٍ ۚ﴿۲﴾

 

তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ থেকে।

 

96:3

 

اِقۡرَاۡ وَ رَبُّکَ الۡاَکۡرَمُ ۙ﴿۳﴾

 

পড়, আর তোমার রব মহামহিম।

96:4

 

الَّذِیۡ عَلَّمَ بِالۡقَلَمِ ۙ﴿۴﴾

 

যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন।

আবার যে পাঁচটি আয়াত প্রথম নাজিল হয়েছিল এর ভেতরেও ইলম(এডুকেশন )শব্দটি এসেছে 6 বার। তাহলে দেখা গেল আল্লাহ তালা “পড়” দিয়ে শুরু করলেন অথচ আজকে আমরা শিক্ষা থেকে অনেক দূরে। শুনলে অবাক হতে হয় 57 টি মুসলিম দেশে মোট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা 500 টি। আর শুধু আমেরিকাতেই আছে 5758 টি বিশ্ববিদ্যালয় ।আর গোটা পৃথিবীতে যে উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয় আছে তার সংখ্যা 500 টি। আর এই 500 টি উচ্চ মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি মাত্র মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় হল আল আজহারী বিশ্ববিদ্যালয়।আমারা মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে রাজনীতি আর অন্য কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকি তাহলে আমরা আবিষ্কার করব কখন আর গবেষণা করবইবা কখন শুনতে খারাপ লাগলে মাফ করবে।আমাদের আজকের যুব সমাজে দেখা যায় পাবজি, ফ্রী- ফায়ার খেলোয়াড় ও সিনেমার তারকা, গান নিয়েই বেশি মও ।আর পাবজি,ফ্রী ফায়ার এ গুলি তৈরি করেছে ইহুদী-খ্রিস্টানরা এগুলো যুবসমাজ খেলে সময় নষ্ট করে। অথচ তারা ঠিকই পড়াশোনা করছে আমাদের উপর নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের মুসলিম সমাজে আলহামদুলিল্লাহ অনেক মেধা আছে কিন্তু তার মূল্যায়ন আমরা করি না। তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই না। আমরা তাদের সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে দিয়ে তাস খেলা, জুয়া খেলা,মদ্য- পান, বিড়ি, সিগারেটএ হাজার হাজার টাকা নষ্ট করি। শুনলে অবাক হতে হয় গত 100 বছরের মধ্যে ইহুদী-খ্রিস্টানরা একাধিক বিজ্ঞানী কে জন্ম দিয়েছে। আমাদের মুসলিম দেশগুলোতে তার সংখ্যা খুবই কম। তার একটা কারণ পড়াশো না করা ।মেধাদের সমাজে মূল্যায়ন ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দেওয়া ।খ্রিস্টানদের শিক্ষার হার শতকরা 90 জন ।আর মুসলিম দেশগুলোতে শিক্ষার হার শতকরা 40 ।যদিও কিছুটা উন্নতি হয়েছে তারপরও তাদের মধ্যে নৈতিকতা (ইংরেজি: Morality যার অর্থ হলো ভদ্রতা, চরিত্র, উত্তম আচরণ) শিক্ষার অভাব দেখা গেছে। আমরা মারামারি,হানাহানি ,সমালোচনা করতেই ব্যস্ত ।আর কখন নিজে খাবো আর কখন নিজে ভালো থাকবো এটাই ভাবি ।আমাদের সমাজে কোন একটা ভালো সংগঠন নেই যারা এই সমাজের হাল ধরবে এই পিছিয়ে পড়া সমাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে । এখন থেকে যদি আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব না দিয়ে তাহলে একদিন আমাদেরকে সমাজের সবার পায়ের তলায় থাকতে হবে। আমাদেরকে ধ্বংস হয়ে যেতে হবে।

___________

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *