এ আর আহমেদ হোসাইন (কুমিল্লা জেলা)বিশেষ প্রতিনিধিঃ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ১২০ বছরে পর্দাপন করেছে ২৪ শে নভেম্বর ২০১৯ইং রোজ রবিবারে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ কুমিল্লা জেলায় অবস্থিত।ওইটি কুমিল্লার সবচেয়ে পুরাতন এবং বিখ্যাত কলেজ।কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ২৪শে নভেম্বর ১৮৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায় রানী ভিক্টোরিয়ার নামে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।তিনি ঠিকাদারি পেশার সাথে যুক্ত ছিলেন এবং শিক্ষা-অনুরাগী ছিলেন।কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছিলেন তিনি।
কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর ব্রিটিশ সরকার তাকে রায় বাহাদুর উপাধি প্রদান করে।তার স্মতি রক্ষার্তে ভিক্টোরিয়া কলেজের ইন্টারমেডিয়েট শাখায় প্রধান ফটকে একটি সাদা রঙের ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন এই কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।ওই কলেজ বাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত।
বর্তমানে ওই কলেজের চলমান অধ্যক্ষ প্রফেসর রুহুল আমিন ভূইয়া, শিক্ষায়তনিক কর্মকর্তা আছেন, ১২৫ জন,প্রশাসনিক কর্মকর্তা ২২০ জন, ৪টি অনুষদে ২০টি বিভাগে অনার্স ও ১৮টি বিষয়ে মাস্টার্স চালু।
বর্তমানে কলেজটি দুটি অংশে বিভক্ত।কান্দিরপার রানীদীঘির পাড়ে কলেজের ইন্টারমিডিয়েট শাখা এবং ধর্মপুরে অনার্স ও মাস্টার্স শাখা অবস্থিত।প্রায় ২৯,৯০০শ শিক্ষার্থীর পদচারণায় কলেজটি মুখরিত হয় প্রতিদিন।ওই কলেজে রয়েছে ১২টি সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন।সংগঠনগুলো শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখছে।
ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে কলেজটির ভূমিকা ছিল অনন্য।উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মণ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু,অদ্বৈত্য মল্লবর্মণ, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত,অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, হানিফ সংকেত, বিদ্যা সিনহা মিম,সংগীত শিল্পী আসিফ আকবরের মতো অসংখ্য খ্যাতনামা সাবেকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছিল ভিক্টোরিয়ার ক্যাম্পাস।
আধুনিকতার সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কলেজটি। এখানকার প্রতিটি ভবনের ডিজাইন সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এছাড়া হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, জিয়া অডিটোরিয়াম, মুক্তমঞ্চ (নির্মাণাধীন),স্বাধীনতা স্তম্ভ, আনন্দচন্দ্র রায়ের প্রতিকৃতি,শহীদ মিনার, কলেজ ক্যান্টিন, কলেজ লেক,রানীদীঘি,কবি নজরুল ইসলাম হল,নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল,মুতাহের হোসেন চৌধুরী লাইব্রেরি ভিক্টোরিয়া কলেজের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইন্টারমিডিয়েট শাখার রানীদীঘির পাড়ে বসে তার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন,লিখতেন কবিতা।কথিত আছে, এখানে বসেই কবি তার প্রিয়তমা নার্গিসকে প্রেমপত্র লিখে পাঠাতেন।
শত বাধা পেরিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ আজ তার ১২০ বছর পূর্ণ করছে।নিজস্বতা ধরে রেখে পথ চলছে আগামীর। ওই কলেজের শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় চাহিদা একটি খেলার মাঠ।জিয়া অডিটোরিয়ামের পূর্ব পাশের বিশাল খোলা জায়গাটিকে মাঠে পরিণত করা যেতে পারে।
এছাড়া প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা ভবন নির্মাণ সময়ের দাবি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে যে আনন্দধারা প্রবাহিত ছিল,তা অব্যাহত থাকুক। এটাই প্রত্যাশা ১২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ওই কলেজের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও কুমিল্লা বাসীর।