কুমিল্লার মেয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর। একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। নিজের মেধা, মননশীলতা, কর্মনিষ্ঠা এবং একাগ্র প্রচেষ্টার কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্টসশিল্পে হেলেনা জাহাঙ্গীর একটি আলোকিত মুখ। তিনি বর্তমানে তৈরি পোশাকশিল্পের পৃথক পৃথক খাতে একাধারে চারটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
মাত্র অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। কিন্তু অদম্য ইচ্ছা আর মানসিক শক্তির কারণে বিয়ের পর তিনি স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকলেও নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিদ থেকে শুরু করেন ব্যবসা। ছোট্ট একটি কারখানার মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে নিষ্ঠা, পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তি দিয়ে একে একে ছয়টি কারখানা গড়ে তুলেছেন। তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল জয়যাত্রা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান তিনি বলেন,
“২০২০ “সালে বেঁচে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ …
লক ডাউন উঠে যাবে কয়েকদিন পর। কেন উঠবে সেটাও পরিষ্কার। হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে। লকডাউন রাখা হয়েছিল ভাইরাসটা যেন ধীরে ছড়ায়, ততদিনে যেন ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, পুরো পৃথিবীর ৭০০ কোটির সবার হাতে হাতে এই ভ্যাক্সিন পৌছাতে, কম করে হলেও ৩-৪ বছর লাগবে। তাই এমন অনন্তকাল লক ডাউন রাখা সম্ভবও না, সে যত উন্নত রাষ্ট্রই হোক না কেন। চীন,ইতালিতেও উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে লকডাউন।
তবে আমরা কি এভাবেই মরব?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, হ্যা এবং এটা একদমই প্রাকৃতিক ব্যাপার। প্রতিটা যুগে যুগে এমন Evolution হয়েছে। এক যুগে ‘ডাইনোসর’ ছিল, কিন্তু প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারে নি বলে তারা আজ নেই। অথচ সেই জুরাসিক যুগের ‘তেলাপোকা’ এখনো টিকে আছে। কারণ সে নিজেকে Evolve করে, নিজেকে চেঞ্জ করে প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পেরেছে। ম্যামথও ছিল তখন, হয়ত ‘ম্যামথ’ তার রুপ চেঞ্জ করেই বর্তমানের হাতি হয়েছে। এগুলাই Evolution।
তো এগুলা বলার মানে কি? এগুলা জেনে কি করব?
আমাদেরও প্রকৃতির উপাদানের সাথে Evolve হতে হবে। লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। আমাদের নিজেদেরও চেঞ্জ হতে হবে। কিছু নিয়ম মেনে চললেই এই টিকে থাকা সম্ভব।
১) অভ্যাসঃ
বাজে অভ্যাসগুলা ত্যাগ করতে হবে। কথায় কথায় মুখে আঙুল দেয়া, কলমের মুখ কামড়ানো, আঙুল জিব্বায় লাগিয়ে কাগজ উল্টানো, সেপ দিয়ে টাকা গোনা ইত্যাদি যুগ যুগ ধরে চলে আসা বাজে অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। সাথে মাস্ক পড়তে হবে এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যেস গড়ে তুলতে হবে। ২০০৩ এ জাপানে সার্স ভাইরাসের মহামারির পর তাদের মধ্যে এই অভ্যেস গুলা গড়ে উঠেছিল, যা আজ খুব ভাল কাজ করতেসে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে।
২) এনভায়রনমেন্টঃ
আমরা খুব ভাগ্যবান যে আমরা এমন পরিবেশে আছি। নয়ত এই ঘনবসতি দেশ কবেই শেষ হয়ে যেত। আর্দ্রতা এবং তাপমাত্রা খুব ভাল কাজ করতেসে। আর্দ্রতা বেশি থাকা মানে বাতাসে ধুলাবালি কম উড়বে। শীতে আর্দ্রতা কম থাকে, চারিদিক শুষ্ক থাকে বলে বেশি ধুলা ওড়ে। এজন্য শীত প্রধান দেশে এই ভাইরাস হানা দিতেসে বেশি। তাই ঠান্ডা এসি এভোয়েড করতে হবে, এসি রুমের আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়।
৩) ইমিউনিটিঃ
এটাই মোস্ট ইম্পোর্টেন্ট। এই পুরো পোস্ট লিখার পেছনে এই পয়েন্টটাই দায়ী। হার্ড ইমিউনিটির বিকল্প নাই। আমাদের ইমিউনিটি বুস্ট করতেই হবে। সেটা কিভাবে?
#ফিজিক্যালি এন্ড #মেন্টালি।
#ফিজিক্যালিঃ
★ নিয়ম মাফিক ঘুমাতে হবে, রাত জাগা খুব খারাপ শরীর ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
★ প্রতিদিন ব্যায়াম করতে হবে, প্রায় ১৫-৩০ মিনিট। মাসল এক্টিভিটি বাড়াতে হবে।
★ প্রায়ই রোদে ঘুরতে হবে ছাদে। রোদ দরকার, ভিটামিন ডি লাগবেই
খাবারঃ
★ ভাতে কোন ঘোড়ার আন্ডার পুষ্টিও নাই, উল্টা অতিরিক্ত ভাত খেলে আপনি মোটা হবেন। ভাত কম খেয়ে তরকারি এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে হবে।
★ প্রচুর পানি খেতে হবে ( এটা খুব বাজে অভ্যাস আমরা পানি খেতে চাই না)
★ এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে। শাক সবজি খেতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রটেকশন নিয়ে বাজারে যান, নয়ত ইমিউনিটির অভাবে এমনিও মরতে হবে।
★ ভিটামিন সি বা টক যুক্ত ফল, কমলা, লেবু খেতে হবে। এছাড়াও সিজনাল ফল খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে লেবু সেদ্ধ গরম পানি খান।
★ ফাস্ট ফুড টোটালি অফ, চিনি কিংবা লবন খাওয়াও কমাতে হবে।
★ আমাদের দেশের মশলা গুলা দারুন কাজের। লং, লবঙ্গ, জিরা, হলুদ, দারুচিনি এই গুলা মারাত্মক ভাবে ইমিউনিটি বুস্ট করে। দুধে হলুদ মিশিয়ে খাবেন, হলুদ অনেক কাজের। চায়ে মশলা মিশিয়ে খাবেন। গ্রিন টি (এন্টিঅক্সিডেন্ট) বেস্ট, গ্রিন টি তে এই মশলা গুলা খেলে অনেক ভাল।
★ কালিজিরা কার্যকরী একটা জিনিস। প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে এক চামচ মধুর সাথে কালিজিরা অনেক বেটার একটা কম্বিনেশন। এছাড়া কালিজিরা ভর্তা/ভাজি খাবারে সাথেও খেতে পারেন।
#মেন্টালি
ইমিউন বুস্টের জন্য সঠিক হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক রাখা খুব জরুরি। তাই মন কে শান্ত রাখতে হবে, হাসি খুশি থাকতে হবে। ধর্মীয় প্রার্থনায় মন দিন, মন সুন্দর থাকবে।
সবাই ভাল থাকুক, সবাই সুস্থ থাকুক। সবাইকে নিয়েই বাঁচতে চাই।