লেখক: আসিফ ইকবাল,
আল্লাহ আমার প্রভু আমার নাহি ভয়/আমার নবী মোহাম্মদ ( সা: ) এর তারিফ বিশ্ব জগৎময়।” শুরু করছি সেই মহান রাব্বুল আলামীনের নামে যিনি পরম দয়ালু মহান জ্ঞানী ও সকল সৃষ্টি জগতের মালিক। আর সৃষ্টিজগতের আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি জীব হচ্ছে মানুষ আর এই মানুষকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন শিখিয়েছে কথা বলা । আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যখন আদম (আ:) সৃষ্টি করেছে তখন তিনি সবার সামনে প্রেজেন্ট করলেন আর তিনি যা শিক্ষা দিয়েছেন তা একে একে বলতে বললেন আদম (আ:) আল্লাহর নির্দেশে সব সুন্দরভাবে বর্ণনা করলেন এই যে শিক্ষাদান এটা মানব সৃষ্টির শুরু থেকে অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টি আদম (আ:) কে সকল সৃষ্টি থেকে সুন্দরভাবে শিক্ষা দিয়েছেন যার জন্য তিনি গর্ব করে বলেন” আশরাফুল মাখলুকাত “অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব ।মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনা দ্বারা মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব সাব্যস্ত হয়েছে ।আল্লাহ রাব্বুল আলামীন স্বয়ং আদম (আ:) শিক্ষা দিয়েছেন আর এই শিক্ষা সৃষ্টির শুরু থেকেই । শিক্ষা ছাড়া মানুষের কোন গতি নেই। মানুষ শিক্ষা অর্জন করতে বাধ্য ।কারণ শিক্ষা ছাড়া সৃষ্টি তার স্রষ্টা কে চিনতে পারবে না । তাইতো মহান রাব্বুল আলামিন তার পবিত্র কোরআনে সর্বপ্রথম যে শব্দটি অবতীর্ণ হয়েছে তা ‘ইকরা ” যার অর্থ ” পড়ো” এটি আদেশ মূলক ক্রিয়াপদ। আল্লাহ বলেছেন “পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্তপিণ্ড থেকে ।(সূরা আলাক আয়াত 1 থেকে 3 )”। তাহলে বোঝা যাচ্ছে কোনো জীবকে না বলে মহান আল্লাহ , মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে পড়ার কথা বলেছেন ।পড়া ছাড়া মানব জাতির কোন গতি নেই। কারণ পশুপাখির পড়াশোনা দরকার হয় না ।মুসলিম শাসন কালে পড়াশোনার গতি ছিল বলে একসময় মুসলিমদের স্বর্ণযুগ ছিল। পৃথিবী কাঁপিয়েছিলো জ্ঞান-বিজ্ঞানের সমস্ত শাখাতে । কিন্তু আজ আমাদের গতি মন্থর তার একমাত্র কারণ জ্ঞান চর্চার অভাবে। আজ পড়ার জন্য কেউ কাউকে উৎসাহ দেয় না, সাহায্য করে না ।ভালো কাজে আমাদেরকে সমর্থন করতে হবে। ভালো কাজ করা যেমন ভাল হয়, তাতে সমর্থন করাও একটা কম ভালো নয়। যদি তুমি google সার্চ করো Best countries for Education দেখবে সেখানে লেখা আছে North American and European countries are seen to provide the best Education of the world ‘s feture leaders । তাহলে দেখো আজ আমরা কোথায় আছি। আজ তারা টিকটক, আর মোবাইল গেম করে আমাদের হাতে দিয়ে তারা আমাদেরকে নেশাগ্রস্ত করে দিয়েছে ।আর তাতে আমরা বুঁদ হয়ে গিয়েছে ।তারা ঠিকই পড়াশোনা করছে এগিয়ে যাচ্ছে ।আমাদের ওপর তারা নেতৃত্ব দিচ্ছে। কবে আমাদের ঘুম ভাঙবে ।
ফ্রান্স রনসেল তাঁর বইতে লিখেছেন “জ্ঞানের ধারণা ইসলামী অর্জন করেছিল অনন্য সাফল্য। অতীতের এই সাফল্য অর্জন করেছিল অনবরত।বইয়ের মধ্যে বুঁদ হয়ে থাকা থেকে।
জ্ঞান চর্চা সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ জ্ঞানী মূর্খ কখনো এক হতে পারে না। ঐ ব্যক্তি মূর্খ যে নিজের মূর্খ থাকল আর তার পরিবারকে মূর্খ করে রাখল। এমনকি আল্লাহ্ বলেন “কেউ যদি রাত জেগে জ্ঞান অর্জন করে ,সে নফল সালাতের সয়াব পাবে “।আর সব ধরনের জ্ঞানার্জন, সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশ। তাহলে ভাবো আল্লাহর নির্দেশ আমরা কিভাবে অমান্য করছি। আল্লাহ জ্ঞানীদেরকে কতটা ভালবাসেন।
সাঁতার শিখতে হলে যেমন জলে নামার চাই। সাইকেল চালাতে শিখতে হলে সাইকেল ধরা যায় ।তেমনি পড়াশোনা করা ছাড়া তোমার জীবন মূল্যহীন ।তুমি কোন বৈধ উপায়ে চাকরি পেতে পারো না। সুতরাং তোমাকে পড়তে হবে জন্ম থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। অনেকে পড়তে ইচ্ছা করে না। তোমরা ভাবছো পড়া ,পরে দেখা যাবে । একটা কথা মনে রেখো তুমি যদি সময়ের মূল্য না দাও সময় ও তোমাকে মূল্য দেবে না। অর্থাৎ যাকে তুমি পশ্চাদে ফেলিবে সেই তোমাকে পশ্চাতে টানবে। কারন সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। অনেক সময় আমাদের পড়তে ভালো লাগে না মনে রেখো সুশান্ত পালের ভাষায় বলি যে “সমস্ত লেখক কে অনেক লিখতে হয়। তাদেরকে অনেক সময় ভালো লাগে না। আচ্ছা একটা মানুষকে কি প্রতিদিন পড়তে ভালো লাগে?লাগে না। কিন্তু আপনাকে প্রতিদিন কাজ করতে হবে ।প্রতিদিন সময় করে কিছু শিখতে হবে। কারণ পবিত্র কুরআনের ভাষায় আল্লাহ বলেছেন “যার দুটো দিন সমান গেল সে ধ্বংসের দিকে গেল”।ভাবত আমরা কত সময় এইভাবে নষ্ট করেছি ।
একজন রাইটার যদি তিনি প্রতিদিন টেবিলে বসে অনেক সময় উনার মাথায় কোন কিছু আসে না আর লিখতে ইচ্ছা করে না। লেখাটা লিখে সেটিকে ছিড়ে ফেলে দেন তা ও বসে থাকেন টেবিলে অর্থাৎ নিজেকে জোর করে আটকে রাখেন ।এমন হয়েছে বিখ্যাত মার্কিন রাইটার আর্নেস্ট হেমিংওয়ে তোমরা তাঁর জীবনী পড়বে তার একটা বিখ্যাত উক্তি বলি – ” মানুষ পরাজিত হওয়ার জন্য তৈরি হয়নি, মানুষকে ধ্বংস করা যায় কিন্তু পরাজিত করা যাবে না ।”তার অনেক সময় ছয়-সাত ঘণ্টা টেবিলে বসে কেটেছে উনি একটি পৃষ্ঠা লিখতে পারেনি কিন্তু উনি প্রতিদিন বসেছেন লেখার টেবিলে ।আর একটা সময় বসে থাকতে থাকতে ওটা ওনার অভ্যাসে পরিণত হয় ।তোমরা এখন যারা ভাবছো করনার সময় এখন পড়তে ভালো লাগছে না পড়তে মন বসে না। না বন্ধু তুমি যদি এখন থেকে গতি না বাড়াও তাহলে পরীক্ষার সময় তোমার গতি হারিয়ে যাবে । নিজেকে বোঝানোর চেষ্টা করো যে আমি পড়াশোনা করছি। হয়তোবা তোমার অনেকক্ষণ পড়তে ইচ্ছা করবে না, তারপরও নিজেকে জোর করে পড়ার টেবিলে আটকে রাখবে। তোমার যেখানে গলদ আছে তোমরা এই মুহূর্তে ভালো গাইড নিয়ে পড়তে শুরু করতে পারো। যেখানে তোমাদের গলদ আছে সেগুলো ঠিক করে নিতে পারো ।এটা হচ্ছে সঠিক সময়ে ।তাহলে তোমাদের উচ্চ ডিগ্রি করা তোমাদের আরও সহজ হয়ে যাবে। এভাবে পড়তে পড়তে তুমি সবার আগে এগিয়ে যাবে। আমরা যেমন কোন মানুষের কাছে বা তোমরা যেমন কোন বন্ধু/বান্ধবীর কাছে থাকো তখন তার প্রতি যেমন একটু একটু করে ভালবাসার জন্ম নেয়। ঠিক তেমনি এক সময় তোমার পড়ার প্রতি ভালবাসা জন্ম নেবে ।কারণ তোমাকে আল্লাহর নির্দেশ মানতে হবে। তোমাকে চাকরি পেতে হবে। তোমাকে সাফল্য পেতে হবে এবং সমাজের জন্য কিছু করে যেতে হবে। তুমি ভাবছো সমাজের জন্য কিছু না করে কি হবে একটা কথা মনে রেখো রাসুল( সা:) বলেছেন ” আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী কোন ব্যক্তি জান্নাতে যেতে পারবে না” । তাহলে ভাবো তোমাকে কি করতে হবে সমাজের জন্য, আত্মীয় স্বজনের জন্য? This is your Duty ,সুতরাং,তোমাকে পড়তে হবে সমাজের জন্য কিছু করতে হবে ।কারণ তোমাকে আল্লাহ সুন্দর শরীর দিয়েছে আর এই যৌবনকাল সম্পর্কে তোমাকে প্রশ্ন করা হবে তুমি তা কিসে ব্যয় করেছ। কি কি কাজে ব্যয় করেছ। যে কোন পরিস্থিতিতে তোমাকে পড়তে হবে ।তোমরা নেপোলিয়ানের নাম হয়তো শুনেছ তিনি যুদ্ধক্ষেত্রেও বই সঙ্গে নিয়ে যেতেন। অনেকে বলে আমার টাকা নেই পড়তে পারব না চাকরি পাবনা না ।পড়ে কি হবে ।একটা কথা বলি প্রতিষ্ঠিত করবার মালিক আল্লাহ ।তুমি যে অনেক কে বলো আমার টাকা নেই,আমি গরীব পড়তে পারব না চাকরি পাবো না পড়ে কি হবে ?দেখো বিল গেটস বলেছেন “আপনি যদি গরীব হয়ে জন্ম নেন তাহলে এটা আপনার দোষ নয়, কিন্তু গরীব থেকেই মারা যান তবে সেটা আপনার দোষ “।তোমাকে যেকরে হোক পড়াশোনা করতে হবে। মার্টিন লুথার কিং এর ভাষায় বলি “যদি উড়তে না পার তবে দৌড়াও,যদি দৌড়াতে না পার তবে হাঁটো , হাঁটতেও না পারো তবে হামাগুড়ি দেয়, যাই করো না কেন মনে রেখো সামনে এগিয়ে তোমাকে যেতেই হবে । তোমাকে কঠোর তপস্যা করতে হবে। নজরুল বলেছেন “সাগর থেকে তোমাকে মুক্ত আনতে হবে। দেখো যে নজরুল রুটির দোকানে কাজ করতো। দারিদ্রতার করালগ্রাস তার মেধাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। যিনি নক্ষত্রের মতো দীপ্তিমান হয়ে বেঁচে আছে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে, সাহিত্যপ্রেমীদের অন্তরে । তোমাদের দারিদ্রতা থাকলে থাকতে পারে । তবে ফাঁকা সময় কাজ করে,উপার্জন করে পড়তে হবে। একদিন দেখবে তুমি তোমার লক্ষ্যে ঠিক পৌঁছাবে। তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে ।একটা কথা মনে রেখো সমস্ত নবীরা অনেক পরিশ্রম করেছেন,কষ্ট করেছেন। আবার অনেক ব্যক্তি মনীষা কষ্ট করেছেন বলে তারা বড় জায়গায় আল্লাহর রহমতে যেতে পেরেছে। কারণ সৃষ্টি কর্তা তাদের সহায় থাকেন যারা কঠোর পরিশ্রম করেন। পড়াশোনা বা কোনো ভালো কাজে সব সময় সবাইকে নাও পেতে পারো পাশে। কিন্তু থেমে যাবে না রবীন্দ্রনাথের ভাষায়” যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলোরে”। জীবনের সব মুহূর্তে তোমার পাশে কোন ব্যাক্তি নাও থাকতে পারে তুমি ভরসা রাখবে আল্লাহর উপর। নিজে চেষ্টা করবে আর সেই চেষ্টার ডানায় ভর করে এগিয়ে যাবে। তাইতো কোন এক গায়ক গানে বলেছেন “রুক জা-না নেহি তু কাভি হার কে”। একটা কথা মনে রেখো যে গাছের কাঁটা বেশি সে গাছের ফলের স্বাদও বেশী ।এ পি জে আব্দুল কালামের ভাষায় “স্বপ্ন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তোমাকে স্বপ্ন দেখতে হবে ,আর স্বপ্ন সেটা নয় যেটা ঘুমিয়ে দেখ স্বপ্ন সেটাই যেটা পূরণের প্রত্যাশা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না”। আজকে আমরা যারা নিজেকে ছোট ভাবছি দেখো নজরুলের ভাষায় “নিজেকে শিশু ভেবোনা ছোট ভেবনা ক্ষুদ্র তুমি / তুমি নিতে পারো জয় করিয়া বিপুল বিশ্ব ভূমি”। আবার নজরুল বলেছে দেখো “মাগো আমায় সাজিয়ে দেগো বাইরে যাবার দেশে/ রইবোনা আর আচল ঢাকা গণ্ডি আঁকা দেশে “।আমরা বসে বসে অনেকে প্রতিভা নষ্ট করছি ।কিন্তু দেখো কার মধ্যে কি রয়েছে আমরা কেউ জানি না ।কিন্তু যদি বসে বসে তোমার প্রতিভা নষ্ট করো তাহলে পৃথিবীর অর্ধেক ভালো কিছু একটা নষ্ট করে দিলে। তাইতো তোমাকে জাগতে হবে কিছু করতে হবে ।এ পি জে আব্দুল কালামের ভাষায় ” তুমি যদি সূর্যর মতো উজ্জ্বল হতে চাও ।তাহলে আগে সূর্যের মতো পুড়তে শেখো ” ।তুমি যদি পৃথিবীতে কোন কিছু করে যাও তাহলে সবার জন্য একটা মঙ্গল। নজরুল দেখো কি বলেছে ” আমার ঘাটের সওদা নিয়ে যাব সবার ঘাটে/ চলবে আমার বেচাকেনা বিশ্বজোড়া হাটে “। আর তুমি না ঘরে বসে থাকো? তোমার প্রতিভাকে নষ্ট করছো আল্লাহ তোমার মধ্যে কিছু রেখেছে। তার জন্য তোমাকে কাজে নেমে পড়তে হবে ।তুমি ভাবছো যে আমার দ্বারা কিছু হবে না। তুমি যদি বসে থাকো তাহলে কি করে হবে ।একটা কথা মনে রেখো পাখিরা চাষবাস করে না কিন্তু দেখো সকাল হলেই তারা আল্লাহর দেওয়া রিজিকের তালাশে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। আর তুমি বাড়িতে বসে বসে সবকিছু পেয়ে যাবে। বা:বা: নজরুল কি বলেছে দেখো -” বলবো আমি ভয় কি গো মা বাণিজ্যেতে যায়/ (হালাল পথে ব্যবসা-বাণিজ্য করা ইসলাম ধর্ম গুরুত্ব দিয়েছে) সেই মণি মা এনে দেবো তোর ঘরে যা নায়”। আর তুমি আনতে যাও, যা তোমার দরকার ।তুমি যদি না যাও তাহলে কি করে হবে ।এটা তুমি নিজেকে ধোকা দিচ্ছ।একটা কথা মনে রেখো বসে বসে অন্য কাজে সময় নষ্ট করা একটা গুনা । আর যদি তুমি তোমার চাহিদা পূরণ হয়ে যায় তবে তোমাকে আল্লাহ সুস্থতা দিয়েছে তা তোমার দিনের জন্য ,তোমাকে প্রত্যেকের কথা ভাবতে হবে। প্রত্যেকের হক আদায় করতে হবে। অনেকে ভাবছো আমার বাবা-মা গরিব আমার বড় দুঃখ ।নজরুলের ভাষায় বলছি “দুঃখিনী তুই,তাইত মা এ দুখ ঘুচাব আজ/ জগৎ জুড়ে সুখ কুড়াব-ঢাকবো মা এ লাজ “। তোমাদের মা-বাবা তোমাদের দুঃখে কষ্টে মানুষ করেছে। আর তুমি মোবাইল এ কার্টুন আর গেম খেলে সময় নষ্ট করছো ।মায়ের দুঃখ তুমি দূর করবে কি করে? এ কেন,এ কেমন ছেলে তুমি ? তুমি যদি তোমার মায়ের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে না পারো বাবা মার জন্য কিছু করতে না পারো ।যে বাবা খালি পেটে না খেয়ে তোমার জন্য 100 টাকা রেখে কাজে গেছে যাতে তুমি পড়ার খরচ চালাতে পারো। যে মা তোমার খরচের কথা ভেবে ঈদে একটা নতুন শাড়ি পর্যন্ত না কিনে ,নিজের সুখকে মাটিতে মিশিয়ে তোমার আর তোমার আবদার পূরণ করেছে ।আর সেই বাবা-মাকে সুখ না দিয়ে তুমি মরে গেলে জান্নাতে যাবে । Never সব দুঃখ কষ্ট কে ভেঙে চুরমার করে দিতে হবে তোমাকে দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে ।দেখো নজরুলের ভাষায় বলছি” লাল জহরত পান্না চুনি মুক্তমালা আমি /আমি হব রাজার কুমার মা হবে রাজরানী “।কোন কিছু করে বড় জায়গায় তুমি যখন পৌঁছাবে ,ভালো একটা চাকরি পাবে, ভালো ভালো কিছু সমাজের জন্য করবে। তখন তোমার বাবা-মা র গর্বে বুক ফুলে উঠবে ।আর তুমি তোমার বাবাকে রাজা বানাতে পারবে আর তুমি তোমার মাকে রানী বানাতে পারবে। তবেই তুমি আদর্শ সন্তান হবে। অনেক সময় অনেকের বাবা-মা লকডাউন এ টিউশন যেতে ,পড়তে বারণ করে । না বন্ধু তুমি এভাবে থেমে যেওনা। বাবা-মাকে ভালোভাবে বোঝাও ।তোমার যে জায়গাগুলো গলদ আছে সেগুলো কে তুমি বোঝাও যে আমার এই জায়গাগুলো সমস্যা আছে । এবার একটি গাইডলাইন নাও, তুমি এগিয়ে যাও ।এখনই সুবর্ণ সুযোগ এই সময়টা কে ভালো ভাবে নিজের জন্য কাজে লাগাও । বাবা মা কে বোঝাও দেখো কিভাবে নজরুল বলছে- “আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে/তোমার ছেলে উঠলে মাগো রাত পোহাবে তবে “।তুমি যদি নাই জাগো তাহলে তুমি কেমন ভাবে তোমার স্বপ্ন গুলোকে পূরণ করতে পারবে। কেমনভাবে সমাজের উন্নতি করবে ।একটা জাতির উন্নতি করবে। তোমাকে সমাজের কথা ভাবতে হবে বিশ্ব বিখ্যাত মার্কিন এক্সপার্ট কিম গ্রাস্ট বলেছেন “তুমি যদি তোমার সময়ের মূল্য না দাও তবে অন্যরাও দেবে না, নিজের সময় প্রতিভা বাজে কাজে নষ্ট করা বন্ধ করো তাহলে সফল হবে “।আর দেখো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন” জলের দিকে তাকিয়ে থাকেলে তুমি কোনদিন সাগর পাড়ি দিতে পারবে না,সময় থাকতে তোমাকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে পড়াশোনার জন্য “।অনেকে ভাবছ চাকরি হচ্ছে না পড়ে কি হবে মন ভেঙে যাচ্ছে। তাহলে শোনো আল্লাহ ভাঙ্গা জিনিসগুলোকে অদ্ভুত সুন্দর ভাবে ব্যবহার করেন যেমন- মেঘ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরান ।মাটিকে ভেঙে বের করে আনেন ফসল। ফসল ভেঙ্গে বীজ ।আর বীজ ভেঙে একদিন মহিরুহ।যদি কখনো নিজেকে ছিন্ন মনে হয় তাহলে মনে রেখো আল্লাহ তোমাকে খুব ভালো কিছু তে রুপান্তর করার পরিকল্পনা করছে ।যারা আজ এখন কথাগুলো পড়ছো তারা মনে রেখো অলিম্পিক খেলায় যারা অংশগ্রহণ করে তারা অনেক আগে থেকে প্র্যাকটিস শুরু করে দেয় যাতে সঠিক সময়ে তারা সঠিক খেলাটা দিতে পারে । তুমিও পারবে তুমি আজ থেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে পড়ালেখায় মন দাও । কাজে এগিয়ে যাও। কোন একদিন তুমিও সঠিক খেলা দিতে পারবে। সব সময় আল্লাহকে ভয় করো ।আল্লাহর উপর ভরসা রাখ। আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে চলো। যতদিন না লক্ষ্যে পৌঁছবে ততদিন কাজ করে যাও ।আল্লাহ তোমার মনের ইচ্ছা পূরণ করবে ।আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে পৃথিবীতে মূর্খ হয়ে থাকবো এরকম চিন্তা- ভাবনা করো না কারণ নজরুলের ভাষায় বলছি”ফল বহিয়াছো পাওনিকো রস হায়রে ফলের ঝুড়ি/ লক্ষ বছর ঝর্ণায় ডুবে রস পায়নাকো কোনো নুড়ি “।
এইভাবে পৃথিবীতে তুমি যদি থাকো তাহলে শুধু বেঁচে থাকায় হবে । পৃথিবী এত সুন্দর ,আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে পৃথিবীটাকে কত সুন্দর ভাবে বানিয়েছে তার স্বাদ তুমি পাবে না। আর আল্লাহকে চিনতে হলে জ্ঞান অর্জন করা অবশ্যই ফরজ তোমার জন্য। তোমার যা কিছু প্রয়োজন তা দেওয়ার মালিক আল্লাহ, অন্য কেউ না। মনে রেখো সাহাবীরা সামান্য লবণ দরকার হলেও আল্লাহর কাছে দু’রাকাত সালাত আদায় করে চেয়ে নিতেন। আল্লাহ তো অন্তর যামিনী তিনি জানেন তুমি কি চাও।
আল্লাহ আমাদের সকলকে ভাল কিছু করার ,জ্ঞান চর্চা করার তৌফিক দান করুন (আমিন)।