কুমিল্লার মুরাদনগরে স্বামীকে জামিন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে এক গৃহবধূকে একে একে সাত বার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ৬ জনের বিরুদ্ধে। ধর্ষক ছয় জন, উপজেলা সদর ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত জায়েদ প্রধানের ছেলে ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভোলা (৪০), ছাফর আলী প্রধানের ছেলে মোশারফ হোসেন (৩৫), জসিম মিয়ার ছেলে রিয়াজ মিয়া (২৫), শাহিন শাহ্ এর ছেলে জালাল মিয়া (৩৩), হাশেম মিয়ার ছেলে জীবন মিয়া ও মৃত বেয়ারী মিয়ার ছেলে রেনু মিয়া (৪৫)। ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ ঘটনায় সোমবার (৪ মে) ধর্ষকদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ঐদিন বিকেলেই মামলার প্রধান আসামি ধর্ষক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভোলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের ১৪ই নভেম্বর ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী নিজ এলাকার ২য় শ্রেণীর দুই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা মামলায় জেলে যায়। স্বামী জেলে যাওয়ার পর শাশুরির সাথে থাকতো ওই গৃহবধূ। এক পর্যায় ছেলের সাথে যোগাযোগ করে তার জামিনের জন্য কুমিল্লায় বাসা ভাড়া করে চলে যান শাশুরি। শাশুরি চলে যাওয়ার পর ওই গৃহবধূ স্বামীর জামিনের জন্য ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভোলার কাছে সহযোগিতা চাইলে সে কাজের বাহানা দেখিয়ে রাতে আসার কথা বলে। গত বছরের ২১ নভেম্বর ঐদিন রাতেই ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভোলা স্বামীকে জামিনে ছাড়িয়ে দেয়ার নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই গৃহবধূকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং এ ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ না করতে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখায়। এ ঘটনার ১৪ দিনের মাথায় মামলার ২য় আসামি ইউপি সদস্য ভোলার সহযোগী মোশারফ হোসেন একই কায়দায় ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। তার একদিনের মাথায় ৩য় আসামি, পরদিন ৪র্থ আসামি, তারও একদিনের মাথায় ৫ম আসামি ও ৭দিনের মাথায় ৬ষ্ঠ আসামি ওই গৃহবধূকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এবছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ মামলার ৫ম আসামি মামা শশুর জীবন মিয়া আবারো ওই গৃহবধূকে জোর পূর্বক ধর্ষণকালে তার স্ত্রী দেখে ফেলে। পরে জীবনের স্ত্রী মামি শাশুরি কে সাথে নিয়ে ওই গৃহবধূর শাশুরিকে সকল ঘটনা খুলে বলেন। সে সময় ছেলে জেলে থাকায় ধর্ষকদের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেনি শাশুরি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বামী জেল থেকে জামিনে আসার পর ধর্ষণের ফলে স্ত্রীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পায়। পরে স্থানীয় মাতব্বরদের বিষয়টি অবহিত করলে তারা শালিস করতে রাজি না হওয়ায় থানায় এসে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মনজুর আলম বলেন, এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানায় ৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভোলাকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।