নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে সর্বত্র।

ঢাকা বিভাগ কিশোরগঞ্জ

শিক্ষা ও অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকা আমাদের এই দেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। শহর ও গ্রাম সর্বত্রই নিগৃহীতদের মনে এই ক্ষোভ ও হতাশা দানা বাঁধতে থাকে যে,নারী হিসেবে জন্ম গ্রহণই যেনো অপরাধ। ধর্ষণ, যৌতুকের জন্য নিপীড়ন, পথে নিরাপত্তা না থাকা – এই সব তো আছেই। এমন কি নিজ পরিবারের গন্ডির মধ্যেও অনেকে নিরাপদে নয়। ‘ বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই অবিনাশী পংক্তির সতত উচ্চারণের পরও অনেক ঘরেই নারী নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন জরীপে এর সাক্ষ্য মেলে। একজন নারী হাজারো কষ্ট, যন্ত্রণা, অত্যাচার, অপমান, অপবাদ সহ্য করে স্বামীর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংসারের উন্নতির জন্য চেষ্টা করে। তারপরেও তাকে যৌতুকের জন্য নানান ভাবে নানান ভাষায় অত্যাচার করা হয়, মারধোর করা হয়, এতো শখের সংসার থেকে বের করে দেওয়া হয়। একজন নারী ঘরে থাকতেও অন্য নারী দের নিয়ে স্বপ্ন দেখে অতচ সেই নারী মুখ খুললেই তাকে তালাকের হুমকি দেয়। কথায় কথায় তালাক দেওয়া হয়। নারী কখনো মা, কখনো বউ, কখনো সন্তান। আজ সেই নারীদের সম্মান কোথায়? নারীদের নিজের বলতে কি কিছুই নেই? কেন একদিন তাদের শুণ্য হাতে রাস্তায় বের করে দেওয়া হয়? কেন তাদের এতো অবহেলা করা হয়? কেন তাদের কষ্টের মূল্য দেওয়া হয় না? পুরুষরা যা খুশি করতে পারবে কেন নারী মুখ খুলতে পারবে না? কেন সব সময় তাদের চোখ, কান, মুখ বন্ধ করে সকল অন্যায় অত্যাচার সহ্য করতে হবে? দেশে দেশে কেন নারী সহিংসতার শিকার? এই প্রশ্ন সকলকেই ভাবিয়ে তুলছে। নারী পুরুষের বৈষম্য, নাকি মূল্যবোধের অবক্ষয় অথবা নারী-পুরুষের শারীরিক ও মানুষিক গঠনের পার্থক্য, কারণ যাই হোক, নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে সর্বত্র-এটাই বাস্তব। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই বিষাদে ছেয়ে যায় মন। কোথায় চলেছি আমরা? যেন ফিরে যাচ্ছি আবার সেই আদিম যুগে। হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন, ছিনতাই রাহাজানি ও রাজনৈতিক বিভৎসতা এইসবই আজ শুধু খবর। আজ-কাল আবার পাতাজুড়ে বিভৎস সব রঙিন ছবি। কি লোমহর্ষক সব ঘটনা। প্রতিদিন এ তালিকা যেন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। এ কোন সমাজে আমরা বাস করছি? কেন আমরা এতো অরক্ষিত হয়ে গেলাম? কেন আমরা পারিনা এতো কষ্টের বানানো এ স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে? রাতে পারিনা শান্তিতে ঘুমাতে? নারীর দুর্ভোগ পদে পদে। নারী যেন মানুষ নয় শুধু শরীর সর্বস্ব এক অবলা সত্তা। জন্ম থেকে শুরু হয় মায়ের সতর্ক দৃষ্টির পাহারা। তারপর বড় হতে হতে শুরু হয় তার নিজের শরীর আর সতীত্ব রক্ষার এক দুঃসহ অভিজ্ঞতা জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মাথা ঘামানোর মত কোনো সুযোগই আর থাকে না। সমাজের শাষন হয় কঠোর। যে পুরুষ ধর্ষণ করে। সেই পৈশাচিক আনন্দের ছবি তুলে, ভিডিও করে বাজারে প্রচার করে তার কোনো লজ্জা নেই। লজ্জা সেই ধর্ষিতার। আর তাই সে আত্নহুতি দিয়ে নিজের লজ্জা ঢাকে,পরিবার কে গ্লানি থেকে মুক্তি দেয়। ধর্ষক নির্লজ্জ উৎসাহে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *