জেলায় জেলায় নামল সেনাবাহিনী

বাংলাদেশ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধ করতে দেশের সব জেলায় সেনাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বিবেচনায় সরকার দেশের সব জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে নির্দেশনা মোতাবেক এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মঙ্গলবার দেশের সব বিভাগ এবং জেলায় করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তায় প্রয়োজনীয় সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।

আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী সারাদেশে মোতায়েন করা হবে। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করবেন।

এসময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত এবং বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টিনে থাকা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের পদক্ষেপে সহায়তা ও সমন্বয় করবেন সেনা সদস্যরা। এছাড়া বিভাগ এবং জেলা পর্যায়ে প্রয়োজনে মেডিকেল সহায়তা দেবে সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনী সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনায় বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে তারা জেলা ও বিভাগীয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।

সেনাবাহিনী বিশেষ করে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কেউ নির্ধারিত কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক সময় পালনে ত্রুটি বা অবহেলা করছে কিনা, তা পর্যালোচনা করবে।

এরআগে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সারা দেশে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) মন্ত্রণালয় থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় এ কথা জানান।

সরকার দেশবাসী জনগণ যাত্রীসাধারণ মালিক শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছে যে, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য পরিবহন-এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। পণ্যবাহি যানবাহনে কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না।

এরআগে, করোনার কারণে সারা দেশে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া বাংলাদেশের সব লোকাল ও মেইল ট্রেন সীমিত আকারে চলবে বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (২৪ মার্চ) সকালে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব প্রকার ট্রেন সীমিত আকারে চলবে।

রোববার (২২ মার্চ) দেশের সুপারমার্কেটগুলোসহ সব দোকান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দোকানগুলো বন্ধ থাকবে। তবে, কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকবে।

এর আগে দুপুরে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত করার ঘোষণা দেয়া হয়। আগামী এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে পরীক্ষার নতুন রুটিন জানানো হবে।

রোববার (২২ মার্চ) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বোবরার (২২ মার্চ) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত ব্রিফিং হবে না, সকাল থেকে এমনটাই জানিয়েছিল আইইডিসিআর। তবে, দুপুর দেড়টায় হঠাৎ খবর দেয়া হলো, দুই ঘণ্টা পরেই ব্রিফিং। এতে দেশে নতুন করে তিনজন করোনা রোগী শনাক্তের কথা জানানো হয়।

বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টা দেশে নতুন করে ৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৭ জন। নতুন করে আর কেউ মারা যাননি। তবে আক্রান্তদের মধ্যে আরো ৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলেও জানালেন তিনি। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরলেন ৫ জন। অর্থাৎ বর্তমানে ২০ জন করোনা রোগী আছে বাংলাদেশে।

এদিন, মাঝপথে ব্রিফিংয়ে যোগ দেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। নতুন করে হিসাব নিকাশ করে জানান বর্তমানে ১৩ হাজার কিট মজুত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *