গ্রামে গর্ভে সন্তান নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করা সেই স্কুলছাত্রী (১৫) সন্তান প্রসব করেছে।

বাংলাদেশ

ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা গ্রামে গর্ভে সন্তান নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করা সেই স্কুলছাত্রী (১৫) সন্তান প্রসব করেছে। বৃহস্পতিবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে সে। শিশুটির নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছে।

এদিকে সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও নিজের স্ত্রীর মর্যাদার দাবি জানিয়েছে ওই স্কুলছাত্রী। তবে তার প্রেমিক লুৎফর তালুকদার ওই ছাত্রীর বাড়িতে অবস্থানের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। লুৎফরের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় শিশুটির ক্ষতি করতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে স্কুলছাত্রী ও তার পরিবার।

জানা যায়, পৌর সদরের চৌধুরীকান্দা গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের বিবাহিত ছেলে লুৎফর তালুকদার (২৫) প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে। এতে করে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যায়। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারে আলোচনা করেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে না পেরে গত ১৭ মে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখানে ১০দিন অবস্থান নেয়ার পর ২৭ মে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে স্বজনরা।

এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় ওই স্কুলছাত্রীর বাবা মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আশুতোষ বলেন, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের অভিনয় করে আসছিল ওই গ্রামের ছিদ্দিক তালুকদারের ছেলে লুৎফর তালুকদার (২৫)। লুৎফর তালুকদার বছর খানেক আগে ওই গ্রামের পাশের একটি মেয়েকে বিয়ে করে। বিয়ের পরও প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে। এতে করে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

মামলার বাদী বলেন, দিনমজুরি করে চার মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চলে আমার। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টাকার জন্য মেয়েটিকে করিম জুট মিলে কাজ করতে পাঠাই। সেখানে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে লুৎফর আমার মেয়ের এই সর্বনাশ করেছে। আমি আমার মেয়ের জন্ম দেয়া সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই।

ওই স্কুলছাত্রী জানায়, লুৎফর আমার জীবন নিয়ে খেলেছে। আমি ও আমার মেয়ে মর্যাদা নিয়ে সমাজে বাঁচতে চাই। সন্তান জন্ম দেয়ার পর থেকেই শঙ্কায় রয়েছি, লুৎফরের পরিবার প্রভাবশালী তাই আমার সন্তানের ক্ষতি করে বসতে পারে।

ভাঙ্গা থানা পুলিশের ওসি কাজী সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলা রেকর্ডের পর থেকে আমরা লুৎফরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে কোনো রকম ছাড় দেয়া হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.