কুলিয়ারচরে গণধর্ষণের অভিযোগে পুলিশি হয়রানীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন।

ঢাকা বিভাগ কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গণধর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ মে কুলিয়ারচর থানায় দায়ের করা মামলা নং ২১/১০৯ এর সূত্রধরে পুলিশি হয়রানীর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে হুমায়ুন কবির নামে এক সরকারি কর্মচারী। সোমবার (২২ জুন) সকাল ১১ টার দিকে কুলিয়ারচর পৌরসভা এলাকার দড়িবাগ মহল্লায় নিজ বাড়ীতে ভৈরব উপজেলা খাদ্য গুধামের নিরাপত্তা প্রহরী মো. হুমায়ুন কবির (৫৫) সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বাক্য পাঠ করে বলেন, আমার ছেলে হৃদয় ইকবাল রবিন একজন ব্যাংক কর্মচারী। কুলিয়ারচর থানার একটি মামলায় (২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(৩) জনৈক মো. রবিন মিয়া, পিতা মো. শামু মিয়া, সাং- মেরাতলী, থানা- কুলিয়ারচর, জেলা-কিশোরগঞ্জ কে প্রধান আসামী করা হয়েছে। মামলাটি কুলিয়ারচর থানায় নথিভুক্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ আমার ছেলেকে গ্রেফতারের জন্য হয়রানী করছে। প্রকৃত পক্ষে মামলার ভিকটিমকে আমার ছেলে কখনো দেখেনি বা চেনেও না । একটি মহলের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মিথ্যা মামলায় আমার ছেলেকে জড়ানো হয়েছে। আমার ছেলে কখনো কোন ধরনের অপরাধে জড়িত নয়। তাই সম্মানীত উপস্থিতির মাধ্যমে আমি আমার ছেলেকে স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিরঅপরাধ একটি ছেলেকে এ ধরনের হয়রানি করার জন্য একজন পিতা হিসেবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তার ছেলের নাম হৃদয় ইকবাল রবিন কিন্তু মামলায় যাকে প্রধান আসামী করা হয়েছে তার নাম মো. রবিন মিয়া। নামের কিছুটা মিল থাকলেও পিতা ও গ্রামের নামে গড়মিল রয়েছে। তিনি বলেন, নামের কিছুটা মিল থাকায় কুলিয়ারচর থানার এসআই মো.আতাউর রহমান ও এএসআই নূর মোহাম্মদ বেশ কয়েকদিন যাবৎ তাদের বাড়ীতে ও দোকানে গিয়ে তাদের হয়রানি করে আসছে। সংবাদ সম্মেলনে মো. হুমায়ুন কবিরের ছেলে মো. আশিক ইকবাল রনি (২৮) বলেন, গণধর্ষণের ঘটনার সাথে তার ছোট ভাই রবিন জড়িত নয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণধর্ষণের ঘটনার সাথে পার্শ্ববর্তী মেরাতুলী গ্রামের রাসেল সহ মামুন ও ইমন জড়িত। মামলার এজাহারের কোথাও রাসেলের নাম নেই, তাহলে রাসেল কিভাবে জড়িত এমন এক প্রশ্নের জবাবে রনি বলেন, কিছুদিন আগে মোবাইল ফোনে কথা হলে রাসেল ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলেছে, মামুন ও ইমন ঘটনার সময় রাসেলের সাথে ছিল। তিনি আরো বলেন, থানার এসআই আতাউর রহমান ও এএসআই নূর মোহাম্মদ প্রায়ই তাদের বাড়ীতে ও তার দোকানে আসিয়া তাদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে আসছে। সে পুলিশি হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মো. আঙ্গুর মিয়া, মো. রেশত আলী, মো.সাত্তার মিয়া, মো. বাবুল মিয়া, মো. হারুন অর রশিদ, মো. ফজলু মিয়া, মো.ইসু মিয়া সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ। এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রবিনের পরিবারকে হয়রানি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, তদন্তের স্বার্থে আসামীদের নাম ঠিকানা যাচাই বাছাই করতে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। গণধর্ষণের ঘটনার সাথে রবিন জড়িত ছিল দাবী করে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা ও তার পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে ধর্ষিতার চাচাতো বোন নিলুফা আক্তার নিলা (৩৫) কে আসামী রবিনের পরিবার সহ অন্যান্য আসামী পক্ষের লোকজন মোবাইল ফোনে ও প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদর্শন করে আসছে বলে জানান নিলূফা আক্তার নিলা। উল্লেখ্য, কুলিয়ারচর পৌর এলাকার আশ্রবপুর মহল্লার এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী (২০) নারীকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে গত ২৮ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে তার বাড়ীর পাশ্ববর্তী দোয়ারিয়া কুমারপাড়া শ্বসান ঘাটে নিয়ে ৩ যুবক জোর পূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে মো. রবিন মিয়া (২৩) কে প্রধান আসামী করে মামুন মিয়া (২৫) ও ইমন মিয়ার (২৪) নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২১/১০৯ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *