নাজমুল করিম ফারুক :
কুমিল্লার তিতাসে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক দড়িকান্দি গ্রামের নজিমুদ্দিন মোল্লা ওরফে এসডু মোল্লার ছেলে শাহরিয়া হোসেন (৩২)। ঘটনার পর পুলিশ রাত ১০টায় লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। একই সময় ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে আটক করে থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মর্গে এবং বিকালে আটক ২ আসমীকে কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দড়িকান্দি গ্রামের ওয়াসিমের ছেলে প্রথম শ্রেণিতে পড়–য়া খালেদকে অপহরণ করার অভিযোগে ৯ ফেব্রুয়ারি শাহরিয়ার অত্যাচারের বিরুদ্ধে আসমানিয়া-জাহাপুর সড়কে গ্রামবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। ওই সভায় স্থানীয় লোকজন শাহরিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ তুলেন। এরপর থেকে শাহরিয়ার সাথে স্থানীয় গ্রামবাসীর মতবিরোধ চলে আসছে।
বুধবার বিকালে এলাকায় গরু চুরি করেছে এমন অভিযোগ এনে শাহরিয়াকে গ্রামবাসী পিটিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গোলাম মোস্তফা বাদী হয়ে ২৯জনকে আসামী করে তিতাস থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং-১৫) দায়ের করেন। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে দড়িকান্দি গ্রামের মৃত আঃ লতিফ মেম্বারের ছেলে মোঃ আদিলুজ্জামান (৪৬) ও একই গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে শামীম হোসেন (২৬) কে আটক করে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সকাল থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শাহরিয়ার বড় ভাই গোলাম মোস্তফা বলেন, গ্রাম্য আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার নিয়ে আমাদের সাথে গ্রামের কিছু লোকদের বিরোধ ছিল। বুধবার সন্ধ্যায় আমার ভাই কালিপুর যাওয়ার পথে দড়িকান্দি গ্রামের আব্দুর রহিমের বাড়ির উত্তর পাশে পথরোধ করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে চোর আখ্যা দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। আমার ভাই কোন অপকর্মের সাথে জড়িত না।
এদিকে, আটক আদিলুজ্জামান ও শামীমের পরিবারের একাধিক সদস্য জানান, উক্ত ঘটনার সাথে তারা জড়িত না। আদিল ও শামীম ঘটনার সময় গ্রামে উপস্থিত ছিল না। উদ্দেশ্যপ্রোণিতভাবে তাদের ফাসানো হয়েছে।
তিতাস থানার অফিসার ইনচার্জ সৈদয় আহসানুল ইসলাম জানান, শাহরিয়াকে নির্মমভাবে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে, মাথায় রক্তাক্ত জখম রয়েছে। ঘটনাস্থলেই শাহরিয়ার মৃত্যু হয়। শাহরিয়ার বিরুদ্ধে তিতাস থানায় চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন ও চুরির ঘটনায় ৩টি মামলা রয়েছে। শাহরিয়া হত্যার এজাহারর্ভূক্ত ২ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।