‘আজই শেষ’ ভেবেই নামেন সাব্বির

খেলাধুলা

সাব্বির রহমানকে মাশরাফি বলেন ‘ইমপ্যাক্ট’ খেলোয়াড়। লোয়ার মিডল অর্ডারে দলের এই অন্যতম ভরসা কাল মিক্সড জোনে জানিয়ে গেলেন বিশ্বকাপে নিজের প্রস্তুতির কথা

ফেসবুকের ‘মাই ডে’তে একটা ছবি দিয়েছেন সাব্বির রহমান। মায়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হচ্ছে, সেটির স্ক্রিনশট। ছবিটা বেশ হৃদয়স্পর্শী। ‌‌‘মা’ শব্দটাই তো আবেগময়। দেশ থেকে অনেক দূরে আছেন। মাকে ভীষণ মনে পড়ছে তাঁর।

কার্ডিফের মাঠ সোফিয়া গার্ডেনের মিক্সড জোনে কাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলছিলেন সাব্বির। তাঁর কাছে যখন মায়ের কথা জানতে চাওয়া হলো, পাশে দাঁড়ানো স্টিভ রোডস অবাক চোখে চেষ্টা করলেন কথার মর্মার্থ বুঝতে। সাব্বির অবশ্য দ্রুতই তাঁকে বুঝিয়ে দিলেন, ‘নিয়মিতই মায়ের সঙ্গে ভিডিওতে কথা বলি। কালও বলেছি। সেটির একটা স্ক্রিনশট দিয়েছি ফেসবুকে, সেটি নিয়েই কথা হচ্ছে।’

গত মার্চে বিয়ে করেছেন, দেশে রেখে এসেছেন নবপরিণীতাকে। তাঁর কথাও নিশ্চয়ই মনে পড়ে। অবশ্য গৃহকাতরতা যেন কিছুতেই পেয়ে না বসে, গ্রুপ পর্বের শেষ দিকে স্ত্রীকে পাশে পাচ্ছেন সাব্বির। পরিবারের কথা যতই মনে পড়ুক, এসেছেন বিশ্বকাপের মতো মহাগুরুত্বপূর্ণ এক টুর্নামেন্ট খেলতে, আবেগকে বেশি প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই। সাব্বির তা দিচ্ছেনও না। তাঁর ভাবনাজুড়ে বিশ্বকাপ। এখন তাঁকে নিতে হচ্ছে যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি। প্রস্তুতিটা শতভাগ হচ্ছে কিনা, সেটিই হচ্ছে কথা।

কার্ডিফে কাল বাংলাদেশের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচটা ভেসে যাওয়ায় সবচেয়ে অখুশি হওয়ার কথা সাব্বিরের। তবুও তিনি খুবই হাসিখুশি থাকারই চেষ্টা করলেন। এবং বললেনও, ম্যাচ না হলেও প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি নেই। দল ভালো ‘শেপে’ আছে, আছেন তিনিও।

তিনিও! কীভাবে? আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে বেশির ভাগ ম্যাচে ব্যাটিং করার সুযোগই হয়নি সাব্বিরের। ফাইনালে যাও-বা পেলেন, ফিরেছেন কোনো রান না করেই। কার্ডিফে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটাও গেল বৃষ্টিতে ভেসে। তবুও সাব্বির কীভাবে খুব ভালো অবস্থানে আছেন, সেটি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘আমি অনুশীলনে বিশ্বাস করি। অনুশীলন যদি ভালোভাবে করতে পারি ম্যাচে ভালো আত্মবিশ্বাস পাই। ম্যাচ যেহেতু খেলতে পারিনি, অনুশীলন থেকেই আত্মবিশ্বাস নিচ্ছি।’

পর্যাপ্ত ম্যাচ না খেলা তো আছেই, সাব্বিরের সামনে আরেকটি চ্যালেঞ্জ, একাদশে জায়গা পেতে তাঁকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালের নায়ক মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে। এ চ্যালেঞ্জটাও তাঁর কাছে নতুন নয়। ২০১৫ বিশ্বকাপে তাঁকে একাদশে জায়গা পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছিল নাসির হোসেনের সঙ্গে। এবার সেখানে এসেছেন মোসাদ্দেক। সাব্বির বলছেন, এ চ্যালেঞ্জ নিতেও তিনি প্রস্তুত, ‘চ্যালেঞ্জ নিয়েই খেলছি। এবারও আমার জন্য সহজ হবে না। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব। সব সময়ই এটা মনে করে খেলি, আজই আমার শেষ ম্যাচ! এখান থেকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরের ম্যাচে চেষ্টা করি। ভাবি, আজকের চ্যালেঞ্জটা উতরে যেন পরের ম্যাচে সুযোগ পাই।’

অনেকটা নতুন মুখ হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। গত বিশ্বকাপটা তাঁর কাছে ছিল নিজেকে চেনানোর টুর্নামেন্ট। আর এবার নিজেকে আরেক ধাপে নিয়ে যাওয়ার। সাব্বির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, নিজের ‘পরিণতিবোধ’ আর ‘শক্তি’ দিয়ে চেষ্টা করবেন ইংল্যান্ড বিশ্বকাপটা রাঙানোর।

 

RP:-MohammadKayum

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.