ভিলেন ক্লুজনারের চোকার আফ্রিকার হেরে যাওয়ার বিশ্বকাপ

খেলাধুলা

১৯৯৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। নিশ্চয়ই মনে করিয়ে দিবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনালে ল্যান্স ক্লুজনার আর অ্যালেন ডোনালের সেই রান আউটের কথা। যে বিশ্বকাপে ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট হয়েও ক্লুজনার তার দেশবাসীর কাছে হয়ে ছিলেন ভিলেন। নাটকীয় সেমিফাইনাল জিতে সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ছিল অস্ট্রেলিয়া। এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ডিউক বলের ব্যবহার নিয়েও রয়েছে নানা সমালোচনা। আর এই দশকের প্রথম ২০০৩ বিশ্বকাপেও ছিল অজিদের দাপট। তবে শেন ওয়ার্নের টুর্নামেন্ট শুরুর আগ মুহূর্তে ডোপ টেস্টে পজেটিভ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে।
গেলো দশকের শেষ বিশ্বকাপ। যে বিশ্বকাপটা সারা জীবন আক্ষেপ আর দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে রোমন্থন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট সমর্থকরা। প্রোটিয়াদের জেতা ম্যাচ হেরে যাওয়ার সেই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়ে ছিল গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে।

১৯৯৯ বিশ্বকাপ। ক্রিকেট বিশ্বে সপ্তমবারের মতো শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। আয়োজক ইংল্যান্ড। আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ওয়েলও ছিল বিশ্বকাপের সহযোগী আয়োজন। ১২ দলের অংশগ্রহণে টুর্নামেন্ট হয় রাউন্ড রবিন পদ্বতিতে।

লাল সবুজের প্রতিনিধিদের জন্য এই বিশ্বকাপটা ছিল অধরা স্বপ্ন ছোঁয়ার মতো। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ মঞ্চে আমিনুল ইসলামের বাংলাদেশ। বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের প্রমাণের সেই সুযোগ এসে ছিল ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ে। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে চমকও দিয়ে ছিল টাইগাররা। ৫ ম্যাচে জয় পেয়ে ছিল ২ টি। যেখানে সাঈদ আনোয়ার, শহিদ আফ্রিদি, আজহার মাহমুদ, ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আক্তারদের পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে আগমনী বার্তা দিয়ে ছিল লাল সবুজের বাংলাদেশ।

অবশ্য টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ধারাবাহিকতায় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় অস্ট্রেলিয়ার। যে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে অজিরা জয়ের জন্য ২১৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে ছিলো প্রোটিয়াদের। শেষ উইকেটে আর শেষ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৯ রান। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ক্লুজনার প্রথম দুই বলে ২ চার মেরে ম্যাচ সমতায় নিয়ে আসে। অপর প্রান্তে ছিলেন অ্যালেন ডোনাল। চার বল থেকে দরকার ছিল মাত্র ১ রানের। কিন্তু সেই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে নানা সমালোচনার জন্ম দিয়ে ছিলেন ক্লুজনার। বীর থেকে হয়েছেন ভিলেন। মুখোমুখি দেখায় গ্রুপ পর্বের ম্যাচে জয় থাকায় ফাইনালে উঠে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানকে হারিয়ে ২য় বারের মতো ট্রফি উঁচিয়ে ধরে অজিরা।

চোখ রাখা যাক ২০০৩ বিশ্বকাপে। আগের দশকের দাপট এই দশকেও ধরে রাখে অস্ট্রেলিয়া। সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতকে হারিয়ে সেবার টানা দ্বিতীয়বারের মতো অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি উচিয়ে ধরেন রিকি পন্টিং। যা ছিল অজিদের তৃতীয় সোনালী ট্রফি। যদিও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে সেবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয় শেন ওয়ার্নের ডোপ কেলেঙ্কারির কারণে। টুর্নামেন্ট শুরুর আগ মূহূর্তে ডোপ টেস্টে পজিটিভ ধরা পড়লে মাঝ পথ থেকে তাকে ফিরতে হয় দেশে।

রাউন্ড রবিন এরপর নকআউট পদ্ধিতে ম্যাচ হয় ৫৪টি। আগেরবারের থেকে অংশগ্রহণকারী দেশ ২ টি বেড়ে হয় ১৪টি। দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে আয়োজক হিসেবে থাকে জিম্বাবুয়ে এবং কেনিয়া। যেখানে তৎকালীন জিম্বাবুয়ের সরকারের অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদে আলো আর্মব্যন্ড পড়ে মাঠে নামেন জিম্বাবুয়ের দুই ক্রিকেটার অ্যান্ডি ফ্লায়ার এবং ওলংগা। যা আলোচনার জন্ম দিয়ে ছিল বিশ্বজুড়ে।সূত্রে সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *