মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার স্থানীয় উত্তর বাজারে বিক্রির সময় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর জেলিযুক্ত ১২ কেজি বাগদা চিংড়ি জব্দ করেছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। পরে ১২ কেজি চিংড়িকে ধ্বংসের পাশাপাশি উপস্থিত ক্রেতাদের সচেতন করা হয় এবং এই বিক্রেতা এই ঘটনায় দায়ী না থাকায় এবং ঘটনাটি প্রথমবারের মতো হওয়ায় তাকে সতর্ক করে দেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বাজারে গেলে এই মাছ দেখতে পাই আমরা। বুধবার বিকেলে মাছ বিক্রেতা এই ১২ কেজি মাছ পার্শ্ববর্তী জুড়ি উপজেলার একটি আড়ৎ থেকে বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারে নিয়ে এসেছেন। তিনি নিজেও জানেন না এতে যে জেলি আছে। নিজের অনিচ্ছায় এবং প্রথমবারের মতো হওয়ায় এই বিক্রেতাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে এবং এই মাছ ধ্বংসের পাশাপাশি জেলিযুক্ত মাছ সম্পর্কে উপস্থিত ক্রেতাদের সতর্ক করা হয়েছে।
মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর জেলি মাছে কেন মেশানো হচ্ছে জানতে চাইলে এই মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মোটা-তাজা এবং ওজন বাড়ানোর জন্য নিয়ম করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চিংড়িতে এক ধরনের জেলি মিশিয়ে বিক্রি করছে। মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ পরিষদের অভিযান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জেল- জরিমানাতেও চিংড়িতে এই বিষাক্ত জেলি মেশানো বন্ধ করা যাচ্ছে না। চিংড়িতে সিরিঞ্জের মাধ্যমে জেলি পুশ করা হয়। তারপর চিংড়িগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় যাতে জেলি জমাট বেঁধে যায়। আর এই পুশ করা জেলি চিংড়ির সারা দেহে ছড়িয়ে যাচ্ছে। যেগুলো কিনে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
তিনি আরো বলেন, সাধারণত চিংড়ির আকার বড় করার জন্য এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য চিংড়িতে জেলি মেশানো হয়। কিন্তু মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই জেলি।
চিকিৎসকদের মতে, চিংড়িতে মেশানো এই জেলির কারণে চোখের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমন কি ক্যান্সারেরও কারণ হতে পারে এই জেলি। এদিকে এমন বিষাক্ত জেলি পুশ করা চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করার মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় একটা অংশ আছে চিংড়ি রপ্তানি থেকে। কিন্তু এই বিষাক্ত জেলি মেশানোর ফলে সেটা হুমকির মুখে পড়তে পারে। সূত্রে:- কালের কন্ঠ