কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। হামলায় একাধিক শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার ১২ টার দিকে উপজেলা বি আর টিসি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন গোবিন্দ পুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে, নাজিমুজ্জামান(২২), চন্দন পুর এলাকার মোঃ স্বপন চন্দনপুর,রামনগর এলাকার রিপন সহ অনেকে। গুরুতর আহত নাজিমুজ্জামানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল। অন্যরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নেন।সরেজমিনে দেখা যায়
সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবিতে মানিকারচর বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজের মাঠে প্রবেশ করতে বাধা দেয় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহসীন সোহাগসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে মানিকারচর বাজারে রাস্তায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের ধাক্কা ধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছিলেন মানিকার চর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হারুনর রশীদ এর ছেলে এবং উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলামের ভাতিজা খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম সাধারণ শিক্ষার্থী সহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও ওইখান থেকে সাধারণ শিক্ষার্থী চলে যায়, উপজেলা বিশ্বরোডে হাইওয়ে কমপ্লেক্সের সামনে।সেখান থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মহসিন সোহাগের নেতৃত্ব ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তখন ৮০ মিটার ব্রিজের দিকে দৌড়ে পালানোর সময় অনেকে পানিতে পড়ে যায়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া করার খবর পেয়ে পুনরায় উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম আঞ্চলিক সড়কের ৮০ মিটার ব্রিজ ও বি আর টিসি মোড় এলাকার মাঝামাঝি এসে উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে উভয় পক্ষ চলে যাওয়ার পথে কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী ভয়ে হোটেলে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগের সভাপতি মোহসীন সোহাগ সহ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়।
ঢাবির ৫ নারী হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা
সাজ্জাদ হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে কলেজ মাঠে আসি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পথে পথে আমাদের বাধা ও মারধর করেন। পরে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে কলেজের মাঠ থেকে বের হয়ে বাজারের রাস্তা মধ্যে আসার পরেই তারা অতর্কিতভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে লাঠিপেটা করে। তখন আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পরবর্তীতে হাইওয়ে প্লাজার সামনে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুনরায় হামলা চালালে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম দৈনিক আজকের মেঘনা কে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে মানিকার চর কলেজে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধস্তাধস্তি করলে আমি উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে সরিয়ে যেতে বলি, পরবর্তীতে উপজেলা হাইওয়ে সড়কে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে পুনরায় ধস্তাধস্তি ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়ালে আমি পুনরায় এসে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে নিয়ন্ত্রণ করি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাওয়ার পথে কিছু শিক্ষার্থী বি আর টিসি এলাকায় হোটেলে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালানোর কথা শুনেছি।
মেঘনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, গন্ডগোল হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে এখনো বলতে পারছিনা কে কার উপর হামলা করছে তদন্ত সাপেক্ষে বলতে হবে, কোটা আন্দোলনকারীরা এবং ছাত্রলীগের দুপক্ষেই মধ্যে হামলা হয়েছে।