সোনারগাঁওয়ের রসালো লিচু এখন বাজারে।

কুমিল্লা
দৈনিক আজকের মেঘনা ডট কম স্টাফ  লিটন সরকার বাদল,সোনারগাঁও( নারায়ণগঞ্জ) থেকে ফিরে ,বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এখন সোনারগাঁওয়ের রসালো লিচু। রাজশাহী অঞ্চলের তুলনায় স্বাদে – গন্ধে ভিন্নতা ও আগে বাজারে আসার কারণে সোনারগাঁওয়ের লিচুর সুনাম ও চাহিদা বেশী।

গ্রীষ্মের মাঝামাঝি পাকতে শুরু করে এখানের স্বাদে -গন্ধে লোভনীয় লিচু। জানাযায়,সোনারগাঁও উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ১ টি পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দু’শতাধিকেরও বেশী লিচু বাগান। এসব লিচু বাগানে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। সোনারগাঁওয়ের লিচু বাগানগুলোতে সাধারণত তিন প্রজাতির লিচুর ফলন হয়ে থাকে। এগুলো হলো – পাতি লিচু,কদমী লিচু, বোম্বাই লিচু। এ তিন প্রজাতির লিচুর মধ্যে সোনারগাঁওয়ে পাতি লিচুর গাছের সংখ্যা বেশী হওয়ায় এর ফলনও অনেক বেশী। তিন প্রজাতির লিচুর মধে সবার আগে পাতি লিচু পেকে যায়। তাই লিচু বিক্রির জন্যে গাছ থেকে ছিড়ে ব্যবসায়ীরা সবার আগে বাজারে নিয়ে যান।তিন প্রজাততির লিচুর মধ্যে ব্যবসায়ীরা কদমী লিচু বেশী দামে বাজারে বিক্রি করে থাকেন। কারণ এ প্রজাতির লিচু আকারে বড় ও সুস্বাদু হয়ে থাকে। সর্ব প্রথম পাতি লিচু পরে কদমী লিচু ও সর্বশেষ বোম্বাই জাতের লিচু পেকে থাকে। সরজমিনে গিয়ে সোনারগাঁওয়ের লিচু বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের প্রায় প্রতিটি গাছেই থোকায় থোকায় ঝুলছে পাকা লিচু। সবুজ পাতার ফাকে ফাকে লালিমা রঙ্গে লোভনীয় টসটসে দেখলে জিভে পানী এসে যাবে।বাঁদুড় ও কাকের উপদ্রপ থেকে লিচু রক্ষা করতে বসানো হয়েছে পাহারা।

বাঁশ কিংবা টিনের তৈরি বিশেষ বাজনা বাজিয়ে উচ্চস্বরে শব্দ করে তাড়ানো হচ্ছে কাক ও বাঁদুড়। রাতের বেলায় বাগানে বাগানে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে বৈদ্যুতিক বাতি। ফলে সোনারগাঁওয়ের প্রতিটি লিচু বাগানে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। হাতকোপা গ্রামের বাসিন্দা বাগান মালিক সাব্বির আহম্মেদ রুবেল জানান, গাছ থেকে লিচু পেড়ে ৫০ টি করে আটি বেধে বিক্রির জন্যে বাজারে নেয়া হয়,আবার অনেক সময় ব্যবসায়ীরা গ্রামে এসে পাইকারী দরে লিচু কিনে নিয়ে যান। বর্তমানে একশ লিচু ৩শ থেকে ৪শ টাকা,বোম্বাই লিচু ৪শ থেকে ৫ শ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। সাচিলাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হক ও বাগান মালিক শ্রী রতন দাস বলেন,তিনি তিন বিঘা জমিতে লিচুর গাছ লাগিয়েছেন। এ জমিগুলোতে আগে তিনি সবজি চাষ করতেন। লিচু বাগান করে তিনি পূর্বের চেয়ে বেশী লাভবান হয়েছেন। গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন ফলন হয়েছে বলে জানান তিনি। পানাম নগরীর সুবর্ণ গ্রামের লিচু বাগান মালিক মোঃ বদরুজ্জামান বদু বলেন, ৭/৮ বছর ধরে লিচুর বাগান করছি । কদমী লিচুর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এই লিচুর নতুন বাগান হচ্ছে। অন্য লিচুর থেকে সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় বাজারেও আগে আসায় আমরা লিচু চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছি। এ কারনে লাভবান হওয়ায় দিন দিন সোনারগাঁওয়ে লিচু বাগানের প্রতি ঝুকে পড়ছেন কৃষকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.