ঝালকাঠি রাজাপুর উপজেলায় আইরিন আক্তার কবিতা (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহত কবিতার লাশ উদ্ধার করেছে রাজাপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে নিহতের স্বামী মিরাজ হাওলাদারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আটক করা হয়েছে। হাইলাকাঠি গ্রামের ছালাম হাওলাদারের পুত্র মিরাজ হাওলাদার পেশায় একজন শ্রমিক। নিহত আইরিন আক্তার কবিতা উপজেলার হাইলাকাঠি গ্রামের ইউনুস ভুঁইয়ার মেয়ে ও একই গ্রামের মিরাজ হাওলাদারের স্ত্রী। তার ৭ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
এদিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করলেও কবিতার স্বজনরা বলছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা আরো অভিযোগ করে বলেন এ মৃত্যুর পেছনে অন্য কোন রহস্য রয়েছে। তারা আরো জানান বিয়ের পর থেকে প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাবিনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করাতো। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় বৃহস্পতিবার বিকালে পারিবারিক কলহের কারণে তাকে স্বামী মিরাজ হাওলাদার শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় নিহতের শাশুড়ি জাহানুর বেগম সাথে ছিলেন।
নিহতের শাশুড়ি জাহানুর বেগম জানান দুপুরে খাওয়ার পর ছেলে ও ছেলের বউ তাদের নিজেদের রুমে শুয়ে পড়ে ও ৭ মাস বয়সী নাতি মাহিমাকে নিয়ে তার ছোট ছেলে বাহিরে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে শিশু মাহিমা কান্না শুরু করলে তাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের কাছে নিয়ে আসে। এ সময় দেবরের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় পরিবারের অন্যদের ডাক দেয়। তাঁরা এসে শিশুটির মা কবিতাকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে শিশুটির বাবা মিরাজকে ডাকে মিরাজ তখন ঘরের বাইরে ছিল। সে ঘরে এসে অচেতন স্ত্রী কবিতাকে মা জাহানুরের সাহায্য ও সাথে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে সন্ধ্যার একটু পূর্বে। কবিতার মৃত্যুতে হাসপাতালে শোকার্ত স্বজনদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নিহত আইরিন আক্তার কবিতা ও তা স্বামী সন্তান নিয়ে শশুরবাড়িতে একই ঘরের মধ্যে আলাদা বসবাস করতো বলে জানা গেছে।
রাজাপুর থানার ওসি মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, নিহতের পিতা ইউনুস ভুঁইয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া ওই নারীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে ও মনাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে, ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।