বাংলাদেশের মধ্যে ফরিদপুর অঞ্চল পাট চাষে বিখ্যাত। এ অঞ্চলে প্রচুর
পাট হয়। গোপালগঞ্জের ৫ টি উপজেলাতেই এবারে ব্যাপক হারে পাট
চাষ করেছেন কৃষক। এরমধ্যে জেলার মুকসুদপুর উপজেলাতে পাটের
আবাদ বেশি হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে অতিবৃষ্টিতে কয়েক বার
বীজতলা ডুবে যাওয়ার কারণে জমি ভেজা ও নরম থাকায় সময়মত
আগাছা পরিষ্কার করতে পারেনি কৃষক। এরপর আবার আগাম বন্যার
পানি পাট গাছের গোড়ায় জমে যাওয়ায় পাট পোক্ত বা আঁশ মোটা
ও লম্বা হওয়ার আগেই কাটতে হয়েছে। এতে ওজনে কম হয়েছে এবং
প্রতি বিঘায় কৃষকের ঘাটতি হয়েছে প্রায় সাত থেকে আট মণ
পাট। পাটের ফলন কম হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে পাটের দাম বৃদ্ধির
দিকে নজর দিয়ে কৃষককে চরম লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করবে
সরকার, এমনটাই আশা করছেন তারা।
সদর উপজেলার চরমানিকদাহ গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি মণ
পাট দু’হাজার থেকে ২৪ শ’ টাকায় বিক্রি করতে পারছি। দাম
মোটামুটি ভালো কিন্তু ফলন কম হয়েছে এজন্য এবার লোকসান হবে।
নিচু জমিতে পাট ভাল হয় নাই। পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে পাট
খাটো ও চিকন হয়েছে। এজন্য প্রতি বিঘায় যে পরিমাণ ফলন হয় তার
অর্ধেক ফলন হয়েছে। সদর উপজেলার মানিকহার গ্রামের সুবির কুমার
বলেন, অন্য বছরের তুলনায় পরিবহণ খরচ কম লেগেছে ঠিকই তবে বন্যার
কারণে পানিতে ডুবে যাওয়ায় পাট কাটা খরচ বেড়েছে। এতে খরচের
পরিমাণ একটুও কমেনি। সদর উপজেলার তালার বাজার এলাকার পাট
ব্যবসায়ী কাশেম শেখ জানান, পাট জাগ ও ধোয়ার জন্য এবারে পর্যাপ্ত
পানি পেয়েছে কৃষক। এতে পাটের চেহারা সুন্দর ও সোনালী রঙের
হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছে কৃষক। বেচা-কেনাও ভালো। গোপালগঞ্জ
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায়
জানান, জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ২৪ হাজার ৮শ ৮৩ হেক্টর জমিতে
পাটের আবাদ হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় ৩ হাজার হেক্টর বেশি।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রতি হেক্টরে গড়ে ১.৮৬ মেট্রিক টন।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে বলেও জানান ওই কৃষি কর্মকর্তা। তিনি
কৃষককে পরামর্শ দিয়েছেন আগামী মৌসুমে রবি-৮জাতের পাট
চাষাবাদের জন্য। এটি কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মাধ্যমে
বাজারে এসেছে। লম্বায় ২০ ফুট এবং ফলনও প্রচুর হয় এই রবি-৮
জাতের পাটে জানান তিনি।