গোপালগঞ্জের শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী পাঁচুড়িয়া খালটি এখন দূর্গন্ধময়
পঁচা নর্দমায় পরিনত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ২৮.৩৩ একর আয়তনের জলমহালটি কচুরিপনায়
পরিপূর্ণ হয়ে আছে।এসব কচুরিপানা পঁচে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট করছে। ফলে খালের তীরবর্তী
এলাকার বাসিন্দারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন। পরিবেশ রক্ষার্থে খালটির সংস্কারহ
কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য ভূমি মন্ত্রনালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ওই
এলাকায় বসবাসকারি শতাধিক মানুষ। তাদের দাবী আগের মতো জলমহাল হিসেবে খালটি লীজ
দেওয়া হলে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও বিশুদ্ধ পানির উৎস হিসেবে খালটি সংরক্ষণ করা সম্ভব
হতো। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, গোপালগঞ্জ পৌরসভা এলাকার খাটরা, তেঘরিয়া ও
বোড়াশী ইউনিয়নের বোড়াশী মৌজার সমন্বয়ে প্রায় ২৮.৩৩ একর জমির জুড়ে পাঁচুরিয়া
খালটির অবস্থান। পূর্বে জলমহাল হিসেবে খালটি লীজ দেওয়া হয়।বাংলা ১৪২৪ সালের ৩০ চৈত্র উক্ত
খালের লীজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। খালের তীরে বসবাসকারি নতুন স্কুলের রোডের বাসিন্দা টুকু
মুন্সি বলেন, খালের কচুরিপানা পঁচে দূর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় বাড়ী ঘরে থাকা দায় হয়ে
পড়েছে। পানি ব্যবহার করে এলাকার মানুষ চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরনের জলবাহিত রোগে আক্রান্ত
হচ্ছে। শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের পরিধেয় কাপড় চোপড় পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
খালটি কচুড়পানায় পরিপূর্ণ হয়ে বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে।
ব্যাংকপাড়া এলাকার বাসিন্দা কামরুল হুদা মিল্টন বলেন, এ সময় পাঁচুরিয়া খালটি ছিল অত্র
এলাকার মানুষের অন্যতম পানির উৎস। নিত্য নৈমিত্তিক গৃহস্থলি কাজে এ খালের পানির উপর
নির্ভরশীল ছিল।এছাড়া খালে আগে অনেক মাছ পাওয়া যেত। এখন সেসব মাছ বিলুপ্তির
পথে।পাঁচুড়িয়া খালটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছাড়া হলে
গোপালগঞ্জে মাছের চাহিদা মিটবে এবং সরকারের বিপুল পরিমান রাজস্ব অর্জন হবে।
পাঁচুড়িয়া খালের পাশ্ববর্তী বাসিন্দ এডভোকেট তপন সরকার বলেন, দু’পাশে ১২টি ধর্মীয়
প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পানি পঁচে দূর্গন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসি নামাজের জন্য অযু ও পূজা
অর্চনা করতে পারছে না।খালটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের পাশপাশি লীজ দেওয়া হলে খালের আগের
পরিবেশ ফিরে আসবে।বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত হবে। আমাদের দাবী গোপালগঞ্জ শহরের
মধ্যদিয়ে প্রবাহিত অন্যতম বিশুদ্ধ পানির উৎস পাঁচুড়িয়া খালটি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা ।