গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ চীনের হুবই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে শুরু হয় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। এর পর প্রায় দুই মাস ধরে উহানে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সেসময় ভাইরাসটির বিস্তার রোধে উহান শহর লকডাউন করে চীন। এতে চীনের অন্যান্য প্রদেশে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েনি ভাইরাসটি। ফেব্রুয়ারির শুরুতে উহানে যখন প্রতিদিন হাজারেরও বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে তখন চীনের বাইরে অন্যান্য দেশগুলোতে কয়েকশো আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়। তবে মার্চের মাঝামাঝি থেকে চিত্র পাল্টে যায়। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বাড়তে থাকে সংক্রমণের সংখ্যা। এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতে প্রতিদিন কয়েক হাজার হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এর বিপরীতে চীনে গত ১০ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আড়াইশো।
মার্চের শুরু থেকেই ইতালি, স্পেন, ইরান, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়তে শুরু করে। ইতালি ও স্পেনে কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যা চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। এসব দেশ থেকে চীনে ঢোকা সফরকারীরা দেশটিতে ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটাবেন এমন আশঙ্কায় এবার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের খবরে বলা হয়, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বিশেষ কয়েকটি ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে চীনে প্রবেশ করা যাবে। উল্লেখ্য, চীনে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষ। আর এতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ২৮৭ জনের।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের মোট সংখ্যা চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৫০০ জন। উল্লেখ্য, ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ২৮৫ জন। কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে সবার শীর্ষে।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তাদের এক হুঁশিয়ারি বার্তায় জানায়, নোভেল করোনাভাইরাসের নতুন কেন্দ্রবিন্দু হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতই ৮০ হাজারেরও বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ইতালিতে। তবে চীনে ভাইরাসটির প্রকোপ কমলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইতালিতে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন কয়েক হাজার হারে বাড়ছে।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে ইতালিতে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৮ হাজার ২১৫ জন। এছাড়া স্পেনে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৩৬৫ জনের।
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে শ্লথ অর্থনীতিতে গতি আনতে ও রোগটির মোকাবিলায় চিকিৎসা খাতকে উন্নত করতে এক ঐতিহাসিক প্রণোদনা প্যাকেজ পাস হলো সিনেটে। এ প্যাকেজটির আকার ২ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জরুরী প্রণোদনা প্যাকেজ। বুধবার (২৬ মার্চ, স্থানীয় সময়) সিনেটের এক সভায় ৯৬-০ ভোটে বিলটি পাস হয়।