শোভা পাচ্ছে শহরের বন্দি খাঁচায় দিনাজপুরে দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পাখি দোয়েল

বাংলাদেশ

এহসান প্লুটো,(ফুলবাড়ী)দিনাজপুর প্রতিনিধি; বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল। সাদা-কালো রঙের এ পাখিটি গ্রাম বাংলার সর্বত্র দেখা যেত। দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি কৃষক বান্ধবও এই পাখিটি। এক সময়ে গ্রাম-গঞ্জের মাঠে-ঘাটে, বনে জঙ্গলে, গাছে গাছে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ নানা ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের বিবর্তনে এখন আর চিরচেনা সেই জাতীয় পাখি তেমন দেখা যায় না। পাখি দেখার কলরবে মুখর গ্রামের মেঠো পথ এখন পাখিশূন্য হতে চলছে। বনে জঙ্গলে গাছে পাখি দেখার সেই অপরূপ দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে।দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে জাতীয় পাখি দোয়েল। এ পাখি এখন যেন চোখের আড়াল হচ্ছে দিনদিন। সচরাচর আর দেখা যায় না দোয়েলকে।

দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ঝোপ-ঝাড়ে, রাস্তার পাশে, অফিস বা বাড়ির ছাদে জাতীয় পাখি দোয়েলের ছুটে চলা এখন আর চোখে পড়ে না। শোনাও যায় না দোয়েল পাখির সেই সুমিষ্ট কণ্ঠ ও ডাকাডাকির আওয়াজ। যা জেলা বাসীর অজান্তেই তাদের মনে আনন্দ দিত।অনেক ছোট পাখিদের মধ্যে দোয়েল অন্যতম। অস্থির এই পাখিরা সব সময় গাছের ডালে বা মাটিতে লাফিয়ে বেড়ায় খাবারের খোঁজে। গ্রামাঞ্চলে খুব ভোরে এদের কল-কাকলি শোনা যায়। দোয়েল গ্রামের সৌন্দর্য আরও অপরূপ করে তোলে।
ফুলবাড়ী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের পাখি প্রেমী মনির বলেন, জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পাখি মরে যাচ্ছে, আবার খাদ্য সঙ্কট ও আবাসস্থল কমে যাওয়ায় পাখি বংশ বিস্তার করতে পারছে না, এতে কমে যাচ্ছে পাখি। তাই পরিবেশ রক্ষা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।বিরামপুর উপজেলার একইর গ্রামের পাখি প্রেমী মোঃ শিশির চৌধুরী বলেন, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম এই পাখি দেখতে পান না। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িতে বসেই বেশ কিছু প্রজাতির পাখি পালন করেছি।

যাতে করে নতুন প্রজন্ম পাখি সম্পর্কে জানতে পারে।অনেকেই মনে করেছেন,নদীভাঙনের ফলে ফসলি জমিতে উঠছে ঘরবাড়ি, তা ছাড়া জনসংখ্যার প্রভাবেও কোথাও না কোথায়ও প্রতিদিন নতুন নতুন ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে। এতে গাছ কেটে বন উজাড় করে পাখিদের আবাসস্থল ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে।কৃষকের ফসল বিনষ্টকারী পোকামাকড় দোয়েলের প্রধান খাদ্য হওয়ায় পোকামাকড় দমন করতে এক সময় কৃষকদের আলাদা কোন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হতো না। মূলত এ কারণেই দোয়েল গ্রাম বাংলার মানুষের কাছে কৃষক বন্ধু পাখি হিসেবে বেশ পরিচিত।জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় পাখি মরে যাচ্ছে, আবার খাদ্য সঙ্কট ও আবাসস্থল কমে যাওয়ায় পাখি বংশ বিস্তার করতে পারছে না, এতে কমে যাচ্ছে পাখি। তাই পরিবেশ রক্ষা জরুরি বলে মনে করছেন তারা।বেশি মুনাফার আশায় বনে চোরা শিকারিরা বিভিন্ন ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে শিকারের হাত থেকে বাঁচাতে জীবন রক্ষায় পাখি অন্যত্র চলে যাচ্ছে। অনেক সময় তাদের হাতে মারাও যাচ্ছে পাখি। পাখি রক্ষায় আমাদের সকলের সচেতন হওয় উচিৎ।পাখি শিকারের শাস্তির আইন খুব কঠোর ২০১২ এর ধারা ৩৮ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, ক্রয় বিক্রয়, আটক রাখা, ইত্যাদি দণ্ডনীয় অপরাধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.