সমগ্র বিশ্বের নেয় করোনা আতঙ্কে কাঁপছে চারদিক। এই মারণ ভাইরাসের কালো থাবা থেকে বাঁচতে লকডাউন পর্যন্ত দিচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকা। আর এই করোনা আতঙ্ক পেয়ে বসেছে দেশের সকল নাগরিককে। কেউ একটু অসুস্থ হলেই কিংবা শারীরিক কোনো অসুস্থতা দেখা দিলে, অথবা সামান্যতম উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হলেও, নেপথ্যে দায়ী করা হচ্ছে ‘করোনা’কে। আর সে কারণে মরদেহ দাফন করতেও অপারগতা প্রকাশ করছে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিরা। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধরের ক্ষেত্রেও এরকমটাই হয়েছে। বিগত ৮ থেকে ১০ দিন ধরে জ্বরে ভূগছিলেন তিনি। পরে গত শুক্রবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় তীব্র শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে পরিবারের লোকজন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়ার পূর্বেই নিজ বাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর খবর শুনে পূজা উদ্যাপন পরিষদের লোকজন, পুরোহিত ও সনাতন ধর্মালম্বী আত্মীয়-স্বজন সকলেই মরদেহ সমাহিত করতে প্রথমে আশ্বাস দিলেও, পরে অপারগতা প্রকাশ করেন। শুক্রবার দিবাগত রাত পেরিয়ে পরদিন শনিবার সকালেও মৃতের মরদেহ সমাহিত না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পরে যায় পরিবারের লোকজন। ঠিক সেই সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হরুন এফসিএ’র নির্দেশনায় গঠিত উপজেলা যুবলীগের মরদেহ দাফন কমিটির সদস্যদের অবহিত করেন উপজেলা প্রশাসন। বিষয়টি অবহিত হওয়ার সাথে সাথে উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মোঃ রুহুল আমিনের নেতৃত্বে কমিটির সকল সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে শনিবার বেলা ১০টার দিকে মৃত প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধরের মরদেহ তার পারিবারিক শ্মশানে সমাহিত করেন যুবলীগের সদস্যরা। প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধর (৪৫) উপজেলার যাত্রপুর ইউনিয়নের যাত্রপুর গ্রামের মৃত সুবাস চন্দ্র সূত্রধরের ছেলে ও উপজেলার বাঙ্গরাবাজার থানাধীন রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ইউপি সচিব। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিষেক দাশ বলেন, প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধর করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করার পর পূজা উদ্যাপন পরিষদের লোকজন, পুরোহিত ও সনাতন ধর্মালম্বী আত্মীয়-স্বজন সকলেই মরদেহ সমাহিত করতে প্রথমে আশ্বাস দিলেও, পরে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় আমি উপজেলা যুবলীগের স্বেচ্ছাসেবকগণের সহায়তা চাইলে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার উপস্থিতিতে মৃতের মরদেহ পারিবারিক শ্মশানে সমাহিত করেন। অপরদিকে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করায় প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করে কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে।