স্কুলের ওয়েব হ্যাকড: টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও এসএসসি দিচ্ছে ২ ছাত্রী

বাংলাদেশ

বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য ১৪ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে।ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ১৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন আজ থেকে শুরু হওয়া মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশও নিয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা অপর ১২ শিক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ করেছে।সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধরের নির্দেশে ওই দুই শিক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়।তারা হলো– হ্যাপি আক্তার ও মনোয়ারা আক্তার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গৌরীপুর আরকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র সচিব লুৎফা খাতুন।

তিনি জানান, ইউএনওর নির্দেশে সোমবার সকালে ওই দুই শিক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দেয়া হয়। তারা পরীক্ষা দিচ্ছে।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধর জানান, বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। যেহেতু দুই শিক্ষার্থীর নামে প্রবেশপত্র ইস্যু হয়েছে, সুতরাং তাদের পরীক্ষা দিতে কোনো বাধা নেই। তারা পরীক্ষা দিচ্ছে।এ বছর ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মোট শিক্ষার্থী ছিল ২৫৯ জন। তাদের মধ্যে চূড়ান্ত পরীক্ষায় কৃতকার্য হয় ২৪৫ জন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব শিক্ষার্থীর যথা নিয়মে ফরমপূরণ করেন।তবে ২৩ জানুয়ারি দেয়া প্রবেশপত্রে দেখা যায় ফরম পূরণ করেনি এমন ৩৮ জনের নামে চলে আসে প্রবেশপত্র। বাদ পড়েন ফরম পূরণ করা শিক্ষার্থীরা। মূলত স্কুলের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর অনৈতিক সুবিধা ভোগ করে এই জালিয়াতি করে। তারা বিদ্যালয়ের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে অকৃতকার্য ছাত্রদের ফরম পূরণের ব্যবস্থা করে।

এর পর ৩৮ শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের জন্য বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ডৌহাখলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শহীদুল হক সরকারের নেতৃত্বে শিক্ষক ও অভিভাবকরা বোর্ডে বারবার যোগাযোগের পর শনিবার ৩১ জনের ও রোববার অবশিষ্ট সাতজনের প্রবেশপত্র পান।

বিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হ্যাপি আক্তার ও মনোয়ারা আক্তারের প্রবেশপত্রও রোববার গৌরীপুর আরকে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে।কেন্দ্র সচিব ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নরোত্তম চন্দ্র রায়কে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান।তিনি এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত বক্তব্যে জানান, এ দুই শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে, ফরম পূরণ করেনি এবং সোনালী সেবার মাধ্যমে পরীক্ষার ফিও জমা দেয়নি। প্রবেশপত্র আসায় তিনি বিস্মিত!

এ ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী লিখিত বক্তব্যে জানায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী মহসিন আলম রনি তাদের ফরম পূরণ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে অকৃতকার্য ১৪ জনের মধ্যে দুজন এসএসসির ফরম পূরণ এবং পরীক্ষার সুযোগ দেয়ায় অকৃতকার্য অপর ১২ শিক্ষার্থী সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়ায়।

এ সময় তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদেরও পরীক্ষা দেয়ার দাবিতে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ের সামনে হট্টগোল করে।

তাদের দাবি, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের যোগসূত্রের কারণে তারা পরীক্ষা দিতে পারেনি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ডৌহাখলা ইউনিয়ন পরিষদের শহীদুল হক সরকার জানান, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ারও হুমকি দিচ্ছে। অকৃতকার্য দুজনকে পরীক্ষা দেয়ার সঙ্গে জড়িত বোর্ডের কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *