নওগাঁর সাপাহারে আব্দুল মন্ডল নামে এক ব্যাক্তির মৃত্যু সনদে মৃত্যুর তারিখ দুই রকম হওয়ায় তার সন্তানেরা দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন। এঘটনায় তার সন্তানদের মধ্যে জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে ধুম্রজাল সৃস্টি হয়েছে। ভুক্তভোগির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১২ জুলাই ২০১৭ সালের নুরপুর মৌজায় ৩৭ শতাংশ জমি মৃত আব্দুল মন্ডল তার ছেলে আফসার উদ্দীন নামে রেজিস্ট্রি দলিল করে দেন। দলিল মূলে প্রাপ্ত জমিতে আম গাছের চারা রোপন করেন আফসার উদ্দীন। ১৯ জুন সকালে ওই জমিতে তার রোপিত আম গাছ হতে আম নামিয়ে তা বিক্রির জন্য বাজারের উদ্দেশ্য রহনা দেন আফসার উদ্দীন। পথিমধ্যে আফসার উদ্দীনের অন্য ভাই বোনেরা দলবদ্ধ হয়ে তার পথ রোধ করে দাঁড়ায় এবং গাছ হতে নামানো আম বাজারে নিয়ে যেতে বাধা নিষেদ করে। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।
এতে অফাজ উদ্দীন নামে তাদের এক ভাই আঘাত প্রাপ্ত হয়। খবর পেয়ে সাপাহার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে শান্ত করে। এবং গাছ হতে নামানো আম জব্দ করে। পরে আহত অবস্থায় আফাজ উদ্দীন সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে উঠেন। বিষয়টি আপোষ মিমাংশা ও নিরসনের জন্য উভয় পক্ষের সমন্বয়ে থানা পুলিশের একজন এসআই এর নেতৃত্বে একাধিক বার সাপাহার থানা চত্ত¡রে বসে সালিশি বৈঠক। ওই বৈঠকে মৃত আব্দুল মন্ডল নামে উভয় পক্ষ হতে একই তারিখে নিবন্ধনকৃত একটি মৃত্যুর সনদের ফটো কপি দেখানো হয়। তাতে মৃত্যু নিবন্ধনের তারিখ ও নিবন্ধিত নম্বর যা ২০১৭৬৪১৮৬৭১০০০২১৩ ঠিক থাকলেও মৃত্যু তারিখ একটিতে ১০ জুলাই ২০১৭ ও অপরটিতে ১৩ জুলাই ২০১৭ সাল দেখা যায়। যাতে করে ১২ জুলাই ২০১৭ সালে আফসার উদ্দীনের রেজিস্ট্রিকৃত দলিলটি জাল দলিল বলে প্রমান করার চেষ্টা করে তার প্রতিপক্ষরা। মৃত্যু সনদ বিষয়ে সদর ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী বলেন, উপজেলার
নুরপুর গ্রামের মৃত ভমন মন্ডলের ছেলে মোঃ আব্দুল মন্ডলের নামে ১৩ আগষ্ট ২০১৭ সালে নিবন্ধনকৃত মৃত্যু সনদ একই তারিখে প্রদান করা হয়। যার অনলাইন নিবন্ধনকৃত নম্বর ২০১৭৬৪১৮৬৭১০০০২১৩। যার ১০ জুলাই ২০১৭ সাল মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে ওই সনদে মৃত্যুর তারিখ সংশোধনের জন্য মৃত ব্যাক্তির পরিবার থেকে
আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই পূর্বক ওই মৃত্যু সনদটি সংশোধন করা হয়। এবং ১৩ জুলাই ২০১৭ সাল উল্লেখ করে আরও একটি মৃত্যু সনদ প্রদান করা হয়। যা সঠিক বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে শনিবার (৪ জুন) সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, জমি জমা সংক্রান্ত ঘটনা আদালতের বিষয়। তবে মারামারির ঘটনায় পহেলা জুলাই একটি মামলার প্রেক্ষিতে ওইদিন আফসার উদ্দীনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক মৃত্যু তারিখ নির্ধারন করে বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা।