মোঃ আলাউদ্দিন: কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের দিক থেকে প্রায় শূন্য। নাটক, সংগীত, নৃত্য কিংবা অন্যান্য সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে নেই কোনো প্রাণচাঞ্চল্য। এই অবস্থায় উপজেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ শিল্পকলা একাডেমি চালুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও সচেতন মহল।
মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক আব্দুল মালেক বলেন, মেঘনায় কোনো ক্লাসিক বা সর্বজনীন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম নিয়মিত হয় না। নেই শিল্পীদের জন্য প্রশিক্ষণ বা প্রদর্শনীর নির্দিষ্ট স্থান। ফলে স্থানীয় তরুণদের সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের সুযোগ নেই বললেই চলে। মেধা থাকা সত্ত্বেও মঞ্চ না পাওয়ায় অনেকে হতাশ হয়ে পড়ছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, “আমাদের এখানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বলতে তেমন কিছুই হয় না। তরুণরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চাইলে বাধ্য হয়ে ঢাকাসহ দূরের কোনো শহরে যেতে হয়। অথচ একটি শিল্পকলা একাডেমি হলে এখানেই প্রশিক্ষণ ও চর্চার সুযোগ মিলত।”
শুধু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডই নয়, সামাজিক সচেতনতায়ও একটি শিল্পকলা একাডেমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন ‘স্বরগ্রাম সংগীত একাডেমির পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, “শিল্পকলার মাধ্যমে সমাজে সহমর্মিতা ও মূল্যবোধ তৈরি করা যায়। মেঘনায় যদি একটি শিল্পকলা একাডেমি গড়ে তোলা হয়, তবে তা তরুণদের মাদকসহ নানা অপরাধ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া এই উপজেলার পার্শ্ববর্তী এলাকা দাউদকান্দি ও চাঁদপুরের মত উপজেলাগুলোতে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আয়োজিত হয়। এসব এলাকায় স্থানীয় শিল্পীরা মঞ্চে উঠে আসার সুযোগ পান। ফলে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অপরাধ প্রবণতাও কম।
মেঘনায় সাংস্কৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অবিলম্বে একটি শিল্পকলা একাডেমি স্থাপন জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল। তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও উদ্যোগ থাকলে মেঘনাও হয়ে উঠতে পারে একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি চালুর মাধ্যমে মেঘনার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীলতার পথে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।