তিন মাস আগে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে পঙ্গু হয়ে যায় রিক্সাচালক আনোয়ার হোসেন। তার পর থেকে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সরকারী বেসরকারী ত্রাণ- সহায়তায় কোন রকম টেনে হিচড়ে চলছিলো তার অভাবের সংসার। টাকার অভাবে ঠিকমত পায়ের চিকিৎসা হচ্ছিল না তার। অভাবের তারনায় ভাঙ্গা পা নিয়েই বহুবার কাজে যেতে চাইলেও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোন কাজ করতে পারেনি। এরই মধ্যে তার পায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অন্যের কাছ থেকে তাকে ঋণ করতে হয়েছে। আর সেই ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে যখন দিশেহারা আনোয়ারের পরিবার। ঠিক তখনই পাড়ার এক লোক আনোয়ারকে পরামর্শ দেয় পাশ্ববর্তী এলাকার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসাইনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য। সেই কথা অনুযায়ী আনোয়ার হোসেন ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে তার সমস্যার কথা জানান। আনোয়ারের কথা শুনে তার কষ্ট লাগবের জন্য কিছু দিনের মধ্যে একটি রিক্সা কিনে দিবে বলে আশ্বস্থ্য করা হয় তাকে। কিছুদিন অপেক্ষা করার কথা বললেও আনোয়ারের যোগাযোগ করার পরদিনই তার বাড়িতে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা পাঠিয়ে দেন ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন। আমজাদ হোসেন ইফাদা ইলেক্টনিক্স লি. এর স্বত্বধিকারী। জানা যায়, ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় উপজেলা সদর ইউনিয়ন এলাকায় অসহায় মানুষের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করাসহ এলাকার গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি। রিক্সা পেয়ে আবেগে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কোনো দিন ভাবি নাই আমার এই দুঃসময়ে এইভাবে আমার পাশে আইয়া কেউ দাড়াইবো। আমজাদ ভাই আমারে একটা রিক্সা কিন্না দিয়া অনেক উপকার করল। আমি ওনার কাছে চির ঋনী হইয়া গেলাম’। ঢাকার বসবাসরত আমজাদ হোসাইন মুঠোফোনে বলেন, এই মূহুর্তে তাকে নগদ টাকা দিলে সে হয়তো এই টাকা সঠিক কাজে লাগাতে পারতো না। তাই তাকে একটি রিক্সা কিনে দিয়েছি হয়েছে। যাতে করে সে এইটার ইনকাম দিয়ে কিছু করতে পারে। চেষ্টা করছি আমার আশপাশে যারা রয়েছে তাদের সকলকে নিয়ে মিলেমিশে ভালো থাকার জন্য। সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যাওয়া আনোয়ার হোসেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাউল্লা গ্রামের বাসিন্দা।