মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের পদপ্রত্যাশী চিন্হিত ক্যাডার, হত্যা মামলার আসামী।

বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, শোভন ইসলাম,রাজধানীর শাহজানপুর এলাকায় ১১ নম্বর ওয়ার্ড (পুরাতন ৩৪) ছাত্রলীগের সভাপতি কাওছার হত্যার মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই নম্বর আসামি শটগান সোহেল ও তার সহযোগি আলী রেজা খান রানা এখন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার শীর্ষ পদপত্যাশী। ইতিমধ্যে তারা এলাকায় মহড়া দিচ্ছেন। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এলাকায় চলাফেরা করছেন। এতে এলাকাবাসী ভীতসন্ত্রস্ত।

 

শীর্ষ সন্ত্রাসী ফ্রিডম মানিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড হলেন ঐ খুনি শর্টগান সোহেল। সে আলী রেজাকে নিয়ে মানিকের হয়ে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করেছেন। তার নাম শুনলেই এলাকাবাসী ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়েন। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার অস্ত্রধারী ক্যাডারেও ছিল এরা দুজন। খালেদ আন্ডারওয়ার্ল্ডের অনেক অবৈধ কাজ তাদেরকে দিয়ে করিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের মার্চ মাসে শাহজানপুরের আমতলায় জুম্মার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর ফ্রিডম মানিক, সোহেল ও রানা মিলে প্রকাশ্যে গুলি করে কাওছারকে হত্যা করে। পরে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু বাদীকে ঐ খুনি নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। পরে পুলিশ বাদী হয়ে ঐ হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদান করে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক শীর্ষ বহিষ্কৃত নেতা ও যুবলীগের অনুপ্রবেশকারী কয়েকজন ঐ খুনিদের স্বেচ্ছাসেবক লীগে অনুপ্রবেশ ঘটান। আসন্ন সম্মেলনে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ পদ চান তারা। তাদেরকে এ পদ পাইয়ে দিতে অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন এবং সংশ্লিষ্টদের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ছাড়াও আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিষ্কৃত নেতাসহ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিদেশে যাওয়ার সময় নিয়মিত টাকা দেয় এরা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে হামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ফ্রিডম মানিকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা কাওছার হত্যার ঐ খুনিরা জড়িত ছিল।

সোহেলের বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কনস্টেবল ও সত্ভাবে জীবন-যাপন করেছেন। তিনি অনেক আগে মারা গেছেন। কিন্তু তার ছেলে অস্ত্রধারী ক্যাডার হয়ে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। বর্তমানে কানাডায় রয়েছে গাড়ি-বাড়িসহ শত কোটি টাকার সম্পদ। যুবলীগ কিংবা স্বেচ্ছাসেবক লীগ মহানগর দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে অনেক অর্থও ব্যয় করেছেন। সংশ্লিষ্ট নেতাদের কাছে এ অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে তার সহযোগি কাওসার হত্যা মামলার অন্যতম আসামী আলী রেজা খান ওরপে রানা ওয়ারেন্টভুক্ত ৩ মামলার আসামী। অস্ত্রসহ একাধিবার সে র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছে। পল্টন থানার একটি মাদক মামলায় সে ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী। সেও আসন্ন সম্মেলনে পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এলাকাবাসী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান শুদ্ধি অভিযানে তারা খুশি। যেখানে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন, সেখানে এ ধরনের খুনিরা কীভাবে দলের পদ থেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় যারা দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী বলেন, খুনিরা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলে আরো বেপরোয়া হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *