মনে রাখবেন সবাই লোক দেখানো দান কবুল হয় না। মো: আলাউদ্দিন

ইসলাম বাংলাদেশ

আল্লাহর রাস্তায় দান একটি মহৎ কাজ।
মানুষের কল্যাণে করা দানগুলোকেই আল্লাহর রাস্তায় দান হিসেবে গণ্য করা হয়।
তবে দরিদ্র মানুষের উপকারে যে দান হয় তা অতুলনীয়।

যে খাতেই দান করুন না কেন, তা অবশ্যই মানব কল্যাণে পৌঁছাতে হবে।
নতুবা সে দানের কোনো মর্ম থাকবে না।
তবে দানের পেছনে মূল উদ্দেশ্য থাকতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
মানুষকে দেখানো বা নিজের প্রচারের জন্য কোনো দানের মূল্য নেই আল্লাহর দরবারে।

তবে মানুষকে দানে উৎসাহিত করতে প্রচার করে দান করা যেতে পারে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত; রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহর ছায়া ব্যতীত কোনো ছায়া থাকবে না, তখন আল্লাহ তাআলা সাত শ্রেণির লোককে তার”আরশ” ছায়া দান করবেন।”তাদের মধ্যে একজন হলো” যে ব্যক্তি এত গোপনে সাদকাহ্ বা দান করে যে,ডান হাত যা দান করে,বাম হাত তা টের পায় না।’ “বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ”
তবে দান গোপন-প্রকাশ্যে যে কোনোভাবে করা যায়।
প্রকাশ্য দানের উদ্দেশ্য যেন ঠিক থাকে।
সব দানেই ছওয়াব রয়েছে।
আল্লাহ বলেন :যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকির-মিসকিনকে দান করে দাও,তবে এটা বেশি উত্তম।আর তিনি তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সূরা বাকারা- ২৭১)। নবী (সা.) বলেন, ‘কিয়ামত দিবসে সাত শ্রেণির মানুষ আরশের নিচে ছায়া লাভ করবে, তন্মধ্যে এক শ্রেণি হচ্ছে_ ‘এক ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কী দান করে বাম হাত জানতেই পারে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)
হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারলাম,গোপনে দান করা হলে তার মর্যাদা অনেক বেশি,যেখানে বর্তমানে বেশিরভাগ দানেই দেখা যাচ্ছে আত্মপ্রচারই মূল উদ্দেশ্য।
তবে যে দান লোক দেখানোর জন্য করা হয় বা মানুষের প্রশংসা/বাহবা কুড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। ‘যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করে ও তা গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে এ জন্য খোঁটা ও কষ্ট দেয় না, তারা পুরস্কৃত হবে। তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না’_(সূরা বাকারা :২৬৩)।
ধন-সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তাআলা। তিনি যাকে ইচ্ছা তা প্রদান করে থাকেন। আবার যার থেকে ইচ্ছে তা কেড়ে নেন। ঠিক সম্মানের মতো। সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও সৎ পথে ব্যয় করা হলেই ওই সম্পদের হিসাব প্রদান করা সহজ হবে।
সূরা আদ্দাহরিয়াতের (আয্যারিয়াত) ১৯ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে :নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নিঃস্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা যা দান করি, কোরআনের দৃষ্টিতে তা দয়া নয়; তা অসহায়দের অধিকার বা হক্কুল ইবাদ। আপনি যখন দান করেন, তখন আপনি সৃষ্টির অধিকারকেই সম্মান করেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.