বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার নিজেদের লোকদের টাকা লুটের সুযোগ করে দিতেই ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে কৃষকদের বঞ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রী বলেছেন, কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ থাকলেও ধানের দাম বাড়ানোর সুযোগ আপাতত সরকারের হাতে নেই।’ আগের রাতের ভোটের সরকারের মন্ত্রীর কাছ থেকে এরকম গণবিরোধী বক্তব্য ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না।
রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান না কিনে কৃষককে মধ্যস্থতাকরীদের কাছে জিম্মি করে ফেলেছে। ধানের ন্যয্য মূল্য না থাকায় টাঙ্গাইলের কালিহাতি, জয়পুরহাট, নেত্রকোণাসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষক পাকা ধান ক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ থেকে ৩০০ টাকা কমে প্রতিমন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জামিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে ২ হাজার টাকা।
রিজভী বলেন, পুঁজিপতিরা তো বিশাল ঋণ মওকুফ পাচ্ছে, হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে খাচ্ছে, মেগা প্রকল্পের নামে দেশজুড়ে হরিলুট চলছে অথচ ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগানদাতা অসহায় কৃষকদের ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে না বরং ন্যায্য মূল্য থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে।
সরকার প্রতি মণ ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকি টাকা চলে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা, মিল মালিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেটে। এ নিয়ে সারা দেশে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও সরকারের টনক নড়ছে না। তিনি বলেন, কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা, দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা না করলে বাংলাদেশে অভিশাপ নেমে আসবে। কৃষকরা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। পৃথিবীর সকল দেশে কৃষকরা উৎপাদন করে লাভ করে, আর আমাদের দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত এবং পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আগামী ২১ মে মঙ্গলবার বিএনপি’র উদ্যোগে দেশব্যাপী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে এবং ২৩ মে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ের হাটে-বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।