কুলিয়ারচরে আ’লীগ নেতার বিচার দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন।

বাংলাদেশ

শাহীন সুলতানা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে এক আওয়ামী লীগ নেতা কর্তৃক ফজিয়া খাতুন নামে এক নারীর উপর হামলা, শ্লীলতাহানী ও পৈশাচিক নির্যাতনের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আগরপুর বাসস্ট্যান্ড-ভাগলপুর রাস্তায় উপজেলার আগরপুর বাজারে স্থানীয় বড়চর এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ বিক্ষোভ ও মানবন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন ফজিয়া খাতুনের স্বামী মোঃ এনু মিয়া, মোঃ হারুন মিয়া, তানজিল আহম্মেদ, মাহতাব উদ্দিন, নিয়াসা, রানা, নাকিব প্রমূখ। এ সময় বক্তারা ফজিয়া খাতুনের উপর নির্মম নির্যাতনের ঘটনা তুলে ধরে বলেন, হামলাকারী রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মাখন ফজিয়া খাতুনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরসহ তার পরনের কাপর খুলে মর্মান্তিক ভাবে যৌনাঙ্গে লাঠি দিয়ে একাধিক আঘাত করে বর্বরতার পরিচয় দিয়েছে। তারা মোহাম্মদ আলী মাখন সহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন।

জানা যায়, আগরপুর গ্রামের মৃত আবু সায়েদ মুন্সির ছেলে মোঃ এনু মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ ফজিয়া খাতুন এর পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে ফজিয়া খাতুনের চাচাত ভাই আগরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবু তালেবের সাথে একযুগ ধরে বিরোধ চলছে। কিছু জমির উপর আবু তালেব দখল প্রতিষ্ঠা করে আছে কিন্তু ফজিয়া খাতুনের দাবী ওই জমি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এই নিয়ে ১০বছর আগে ফজিয়া খাতুন সহ তার ভাই বোনেরা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ৬ মাস আগে আদালতের রায় ফজিয়া খাতুনদের পক্ষে আসে। আদালতের মাধ্যমে দখল ফিরে পাওয়ার পর ফজিয়া খাতুন সহ তার ভাই বোনেরা ওই জমির কিছু অংশে এবার কলা বাগান করেন। গত রোববার রাতে আবু তালেবের লোকজন কলা বাগান কেটে নষ্ট করে ফেলেন। গত সোমবার দুপুরে ফজিয়া খাতুন ও তার ভাই বোনেরা উপজেলার বড়চর গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কলা বাগান দেখতে জমিতে যান। তখন রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী মাখন (৫৫) এর নেতৃত্বে আবু তালেবের লোকজন ওই জমিতে গিয়ে তাদের উপর দা, লাঠি নিয়ে হামলা চালান। হামলায় ফজিয়া খাতুন ও তার বোন রাজিয়া বেগম, রোজিয়া বেগম, নাছিমা বেগম সহ ভাই মেজবাহ উদ্দিন গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা আহদের উদ্ধার করে ভাগলপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় ফজিয়া খাতুনের স্বামী মোঃ এনু মিয়া বাদী হয়ে গত বুধবার (১ জানুয়ারি) কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে আসামীরা তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকী প্রদর্শন করে আসছে বলে জানান মোঃ এনু মিয়া।

এ ব্যাপারে রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আলাল উদ্দিন ও সাবেক ইউপি (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মোঃ মাহতাব উদ্দিন বলেন, এটা একটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা। এই ঘটনার কঠিন বিচার হওয়া উচিত। তারা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন।

মামলা রুজু হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.