নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ডোবায় ডুবে যাওয়া বাসের ২০ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধারকারী সাহসী সেই কনস্টেবল পারভেজের দুর্ঘটনায় থেঁতলে যাওয়া ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার ডান পায়ে হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলা হয়।
পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল গণি মোল্লা বলেন, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পারভেজের পায়ের পচা ও থেঁতলে যাওয়া অংশ কেটে ফেলা হয়েছে।
অস্ত্রোপচারের পর অপারেশন থিয়েটার থেকে তাকে আবারও আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
সোমবার (২৭ মে) সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ার জামালদি বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি বেপরোয়া কাভার্ডভ্যান তাকে ধাক্কা দেয়।
গুরুতর আহত হন পারভেজ। একই সঙ্গে ডান পায়ের গোড়ালি ও হাতে মারাত্মক আঘাত পান। প্রথমে ‘ট্রমালিংক’র স্বেচ্ছাসেবক দল তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখান থেকে ঢাকার রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পঙ্গুতে চিকিৎসাধীন কনস্টেবল পারভেজের জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের চিকিৎসকরা পারভেজের জীবন বাঁচাতে তার পা কেটে ফেলার পরামর্শ দেন। পরে পরিবারের অনুমতি সাপেক্ষে অস্ত্রোপচার করে তার পা কেটে ফেলা হয়।
২০১৭ সালের ৭ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চাঁদপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়ে যায়।
যাত্রীসহ বাসটি ডোবায় ডুবে গেলে তৎকালীন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়া ইউনিফর্ম পরেই পানিতে নেমে পড়েন এবং ২০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘হিরো’ খেতাব পান পারভেজ।
পারভেজ মিয়ার ওই সাহসিকতার জন্য দেওয়া হয় পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)। এছাড়া নগদ টাকা ও মোটরসাইকেল দেন আইজিপি। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি বিপিএম পদক পাওয়া পারভেজ এক সাক্ষাৎকারে জাগো নিউজকে বলেছিলেন, ‘আমার স্বপ্ন এখন ইন্সপেক্টর হওয়া।