চিকিৎসা শেষে প্রায় আড়াই মাস পর সচিবালয়ে নিজ দফতরে অফিস করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার সকাল ১০টার পর তিনি সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আল্লাহর রহমতে ও দেশবাসীর দোয়ায় আমি বেঁচে আছি। আমার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন অনেকেই।
চিকিৎসার সার্বিক তত্ত্বাবধান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মমতা আর মাতৃস্নেহে আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়েছেন, সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।
সবার সহযোগিতা কামনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমি নতুন করে পথ চলতে চাই। বাকী জীবনটা দেশের ও মানুষের সেবায় কাটিয়ে দিতে চাই।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এবারের প্রস্তুতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে বলেও জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গা দুটি রুট। একটা হচ্ছে ঢাকা-গাজীপুর-টাঙ্গাইল উত্তরাঞ্চলের। এখানে সংকটটা হয়, এখানে যানজট হয়। মানুষের দুর্ভোগ হয়। ঘরমুখী যাত্রীরা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে বাড়ি যান।
তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামেও সমস্যা হয় মূলত তিনটি ব্রিজের কারণে। আমার অনুপস্থিতিতে কাঁচপুর ব্রিজের শুভ উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী করেছেন। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতি সেতু উদ্বোধন হবে। এরপর ঢাকা-চট্টগ্রাম ঈদের সময় যে দুর্ভোগ-ভোগান্তি এইগুলো কমে যাবে। সম্পূর্ণ সহনীয় মাত্রায় থাকবে-এটা আমরা বলতে পারি। আমাদের গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল অংশে এখানেও ভোগান্তি কম হবে।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, শরীরের কথা ভেবে আমি প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না হলেও কাজের অগ্রগতি থেমে থাকবে না। আমার এখানে একটা টিমওয়ার্ক আছে। আমার পার্টিতেও একটা টিমওয়ার্ক আছে।
এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পবিষয়ক এক সভা করেন মন্ত্রী।
দীর্ঘ দুই মাস ১০ দিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার দেশে ফেরেন ওবায়দুল কাদের।এদিন দলীয় নেতাকর্মীরা ওবায়দুল কাদেরকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানায়।
শুক্রবার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এদিন নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রধানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, এখন সীমিত পরিসরে কাজ করবেন ওবায়দুল কাদের। দলে এবং মন্ত্রণালয়েও সাধ্যমতো সময় দেবেন।
এরআগে শুক্রবার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এদিন নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রধানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মার্চ সকালে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। সেখানে এনজিওগ্রাম করার পর তার করোনারি ধমনিতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে।
পরে উপমহাদেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ মার্চ তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ দুই মাস তার চিকিৎসা চলে। এরপর গত বুধবার তিনি দেশে ফিরে আসেন।
ওই দিন বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৮৫ ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। দেশে ফিরেই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে স্ত্রীকে নিয়ে গণভবনে যান ওবায়দুল কাদের। সূত্রে:- একুশে টেলিভিশন