সৌদিতে বড় হামলার হুমকি হাউথিদের, ভয়াবহ ক্ষতির মুখে তেল শিল্প

বিশ্ব সংবাদ

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানির অ্যারামকোর মালিকানাধীন বড় দু’টি তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর দেশটিতে আবারও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিয়েছে ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহীরা। হামলার পর এক সংবাদ সম্মেলনে হাউথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র বলেন, ১০টি ড্রোনের সাহায্যে তেল স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে তারা। এদিকে, সৌদি আরবের নিরাপত্তায় যেকোনো সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আশ্বস্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

শনিবার ভোর ৪টার দিকে সৌদি আরবে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি অ্যারামকোর বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র আবকাইকে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। একই সময় রাজধানী রিয়াদ থেকে ১১৬ কিলোমিটার দূরে খুরাইস নামের আরেকটি তেল প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালানো হয়। এতে মুহূর্তেই কারখানা দুটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তীব্রতাও বাড়তে থাকে। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিকভাবে ভয়াবহ এ আগুনে হতাহত কিংবা কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানাতে পারেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ভয়াবহ এ হামলার দায় স্বীকার করে ভবিষ্যতে দেশটিতে আরো বড় আকারে হামলার ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেনের হাউথি বিদ্রোহী। এক সংবাদ সম্মেলনে গোষ্ঠীটির মুখপাত্র বলেন, ১০টি ড্রোনের সাহায্যে ওই হামলা চালানো হয়।

হাউথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, ‘এটি সৌদি আরবের অভ্যন্তরে আমাদের সবচেয়ে বড় হামলা। সৌদি আগ্রাসনের মোকাবিলায় পাল্টা আঘাত করার অধিকার আমাদের রয়েছে। এধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে। সৌদি আরব ৫ বছর ধরে আমাদের বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশটির আরো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আমরা হামলা চালাবো।’

হামলার পর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এসময় হামলার নিন্দা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, সৌদি আরবের নিরাপত্তায় যেকোনো সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।

ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবপক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি অ্যারামকোর সারাবিশ্বে ৬৫ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করে থাকেন। এছাড়া, বিশ্বের মোট জ্বালানি চাহিদার ৫ শতাংশ পূরণ করে থাকে এ প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরে ১১ হাজার ১শ’ কোটি মার্কিন ডলার লাভ করে অ্যারামকো। আর ২০১৮ সালে আয় করে ৩৫ হাজার ৬শ’ কোটি মার্কিন ডলার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হাউথি বিদ্রোহীদের হামলার কারণে ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে বিশ্বের সবেচেয়ে বেশি লাভজনক এ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া, সৌদি আরবে কমে যেতে পারে বিদেশি বিনিয়োগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.