‘একক বাজার ধরে রাখতে ব্যাকস্টপের বিকল্প নেই’

আন্তর্জাতিক

‘ব্যাকস্টপ’ বা আইরিশ সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ, ব্রেক্সিট চুক্তির অপরিহার্য অংশ উল্লেখ করে এটিকে বাদ দিয়ে কোনোভাবেই চুক্তি সই সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) প্যারিসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি আরও বলেন, ইউরোপের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং একক বাজার ধরে রাখতে ব্যাকস্টপের কোন বিকল্প নেই।
অন্যদিকে বরিস জনসন বলেছেন, ব্রিটেন চুক্তির মধ্য দিয়েই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে চায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাকস্টপ সংকটের সমাধান খুঁজে বের করে চুক্তি সই সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

এদিকে ইইউ প্রধান মধ্যস্থতাকারী মাইকেল বার্নিয়ার বলেছেন, শেষ পর্যন্ত চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলেও, এটিকে কখনোই সমর্থন করে না জোট।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো জার্মানি সফর শেষ করে বৃহস্পতিবার ফ্রান্স সফরে যান বরিস জনসন। এসময় প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাসভবন ‘এলিসি প্যালেসে’ পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। পরে ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়ে বৈঠকে বসেন দুই নেতা।

পরে বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং একক বাজার ধরে রাখার স্বার্থে চুক্তিতে ‘ব্যাকস্টপ’ অপরিহার্য। বেক্সিট বাস্তবায়নের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নতুন করে চুক্তি সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, দেখুন, চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর বিষয়টি কেবল একটি দেশের ওপর নির্ভর করছেনা। পুরোটাই নির্ভর করছে জোটের ওপর। একক বাজার এই জোটের অন্যতম ভিত্তি। আর এ কারণেই চুক্তিতে ‘ব্যাকস্টপ’ অপরিহার্য। এ সবকিছুকে প্রাধান্য দিয়েই কিন্তু এর আগে চুক্তির বিষয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে ইইউ’র সমঝোতা হয়েছিল।

তবে, অন্যদিকে, ব্রিটেন ব্রেক্সিট চুক্তি চায় জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাকস্টপের বিকল্প খুঁজে বের করে চুক্তি সইয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ‘ব্যাকস্টপ’ বাদ দিয়েও একটি পূর্ণাঙ্গ এবং কার্যকরী চুক্তি সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জনসন বলেন, আমি মনে করিনা একক বাজার রক্ষার স্বার্থে আইরিশ সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ জরুরি। এটা না করেও একক বাজার বজায় রাখা সম্ভব। আলোচনার মাধ্যমে অবশ্যই একটা বিকল্প খুঁজে বের করা সম্ভব। আমার মনে হয়, এখনও যে সময় আছে তাতে এর একটা বিকল্প খুঁজে বের করে নতুন করে চুক্তি সই সম্ভব।

এর মধ্যেই, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, তিনি এখনও বিশ্বাস করেন নির্ধারিত সময় আগামী ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে ‘ব্যাকস্টপ’ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার অবসান সম্ভব। বৃহস্পতিবার, নেদারল্যান্ডসের হেগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ব্রিটেনকে ব্যাকস্টপের বিকল্প খুঁজে বের করতে ৩০ দিনের সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে বলে যে খবর প্রচারিত হচ্ছে, তাও সত্যি নয়। চুক্তি সইয়ে শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে ইইউ।

এদিকে শেষ পর্যন্ত চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলেও, ইইউ তা কখনোই সমর্থন করেনা বলে মন্তব্য করেছেন জোটের প্রধান আলোচক মিশেল বার্নিয়ার। বেক্সিট পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.