হোমনায় সাপে কাটা গৃহবধূকে বাঁচাতে পারলেন না কবিরাজ

কুমিল্লা হোমনা

কুমিল্লার হোমনায় এক গৃহবধুকে সাপে কাটার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষ না করে কবিরাজের কাছে নিয়ে গেলে ওই গৃহবধুর মৃত্যু হয়। মৃত তানজিনা আক্তার হোমনা উপজেলার গোয়ারি ভাঙ্গা এলাকার আলী আহমেদের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

তানজিনার স্বামী আলী আহমেদ জানান, সকাল আনুমানিক সাতটায় ঘরে বিছানায় শুয়ে ছিলেন তানজিনা। এ সময় তাঁর বাঁ পায়ে আঙ্গুলে সাপের ছোবলের আঘাত টের পান। পরে খাটের নিচে তাকাতেই কালো রঙের একটি সাপকে চলে যেতে দেখেন। সাপের ছোবলের পর তানজিনার শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়। পরে তাঁকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়া হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম দিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। এ সময় স্বজনরা হাসপাতালের চিকিৎসা শেষ না করে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে নিয়ে সেখানে ‘পানপড়া’ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়। এ সময় তানজিনার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। তখন কবিরাজ তানজিনাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। পরে স্বজনরা কবিরাজের বাড়ি থেকে আবারও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তানজিনাকে। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, সাপে কাটার পর তানজিনাকে নিয়ে আসে স্বজনেরা। এ সময় তাঁকে অ্যান্টিভেনমের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকাকালে তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর করেন। একপর্যায়ে নিয়ে যান। পরে তানজিনাকে মৃত অবস্থায় আবার হাসপাতালে আনা হয়।

ঘটনাটিকে দুঃখজনক উল্লেখ করে কুমিল্লার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা সব সময় আহ্বান করি সাপে কাটা রোগীকে ওঝা–কবিরাজের কাছে না নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসুন। প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.