নোয়াখালীর সেনবাগে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার ৩ জন।

নোয়াখালী চট্টগ্রাম বিভাগ

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ১নং ছাতারপাইয়া ইউপি’র পূর্ব ছাতারপাইয়া গ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আট আসামীর মধ্যে তিন আসামীকে গ্রেফতার করে বুধবার(২১ অক্টোবর)দুপুরে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছাতারপাইয়া বদর বাড়ীর হাসান,আবদুল কাউয়ুমের পুত্র শুভ ও আবদুল হকের পুত্র রকি। ঘটনার পরদিন থেকে ধর্ষক পারভেজ পলাতক রয়েছে। এরা সবাই কিশোর গ্যাং এর সদস্য,পারভেজের নেতৃত্বে এদের ১৯ জনের একটা কিশোর গ্যাং রয়েছে বলে জানা যায়। তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর কোলে দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান ও গর্বে একটি সন্তান রয়েছে। এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে তার স্বামী নাছির উদ্দিন বাবু তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।ভেঙ্গে গেছে তার সাজানো সোনার সংসার। এমন পরিস্থিতিতে একুল-ওকুল দুইকুল হারিয়ে এখন সে দিশেহারা। অভিযোগের আলোকে জানা যায়, সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া পূর্ব পাড়ার মাইক্রো চালক নাছির উদ্দিন (বাবু) স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে গত শুক্রবার(৯ অক্টোবর)যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যান,আর এ সুযোগে মাইক্রো চালক শিমুলের ছোট ভাই পারভেজ সন্ধ্যা ৬ টায় মাইক্রো চালক নাছির উদ্দিন বাবুর ঘরে ডুকে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং পারভেজের সহযোগীরা বাহির থেকে জানালার ফাঁক দিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে।পারভেজ ধর্ষণ কাজ শেষ করে চলে যাওয়ার পর পরই হাসান,শুভ,রকিসহ ৮/১০জন ঘরে প্রবেশ করে গৃহবধূকে বলে তুমি পারভেজের সাথে কু-কর্ম করেছো যা আমরা বাহির থেকে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছি এই বলে গৃহবধূর কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে এবং তাদের প্রত্যেকের সাথে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়।নচেৎ ধারণ করা ভিডিও তার স্বামী ও আত্নীয় স্বজনের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। কিশোর গ্যাং এর ঐ প্রস্তাবে গৃহবধূ রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে ভিডিও ফুটেজ তার স্বামীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয়।তার স্বামী বাবু ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে রাত ১১টায় মোবাইল ফোনে কল করে তার ভায়রা ভাই রুবেল কে ঘটনাটি খুলে বলে এবং সকালে তার শ্বাশুড়িকে নিয়ে তাদের বাড়িতে আসতে বলেন।রাত ২ টায় সে চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসে।সকালে তার ভায়রা ভাই রুবেল ও তার শ্বাশুড়িকে ডেকে এনে এই বৌ রাখবে না মর্মে ধর্ষিতা গৃহবধূকে তাদের হাতে তুলে দিয়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।এরপর বিষয়টি আত্নীয় স্বজনের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা চালালে ১০ দিন পর মীমাংসা করতে ব্যর্থ হয়। তারপর মঙ্গলবার(২০ অক্টোবর) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহমান কে বিষয়টি জানিয়ে বিচার চায়।চেয়ারম্যান বিচার করে দিবে বলে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।এরপর তারা স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি নুরুল হক মজুমদারকে বিষয়টি জানালে তিনি ভিকটিম সহ তাদেরকে থানায় পাঠিয়ে দেন।সেনবাগ থানার ওসি আবদুল বাতেন মৃধা ও তদন্ত কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ভিকটিমকে ব্যাপক জিঙ্গাসাবাদের পর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং ৮ জনের নাম ও অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামী করে মামলা রুজু করেন।যার সেনবাগ থানায় মামলা নং ২০,তাং ২১/১০/২০২০ইং। মামলা দায়েরের পর এসআই তারেকের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার এজহারভুক্ত তিন আসামীকে গ্রেফতার করে বুধবার দুপুরে নোয়াখালী জেল কারাগারে প্রেরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.