দুলাল বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে গোপালগঞ্জে গত শনিবার থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ রয়েছে । এতে ২৫ হাজার গ্রাহক চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। গোপালগঞ্জ পল্লী বিদ্যুত সমিতি কর্তৃপক্ষ বলছেন দু’এক দিনের মধ্যে শত ভাগ বিদ্যুৎ সরবারাহ করা হবে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গোপালগঞ্জ কার্যালয় সুত্রে জানাযায় ,শনিবার থেকে গোপালগঞ্জে সর্বত্র বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেন বিদ্যূৎ বিভাগ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) গোপালগঞ্জ । ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তারের উপর গাছ পড়ে ১৬১ টি খুঁিট ভেঙ্গে যায় এবং আরো ২শ খুঁিট হেলে পড়ে যা পানিতে মিশে যায়। এতে ওই সব এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে ।
শনিবার গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সিঙ্গা ও রাহুথর সহ কয়েকটি গ্রামে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিঙ্গা বাজারের উত্তর পাশে বিদ্যুতের ১২টি খুটিঁ পড়ে পানির মধ্যে পড়ে আছে । রাহুথর বাজারে দক্ষিন পাশের দুটি খুঁটি ভেঙ্গে গেছে । ওই এলাকার বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে রয়েছে গ্রাহকরা। কাশিয়ানী উপজেলার রাহুথর গ্রামের বাসিন্দা খলিলুর রহমান বলেন, ঝড়ের কারনে ৭ দিন বিদ্যুৎ নেই । বিদ্যুতের খুঁিট ভেঙ্গে পানিতে পড়ে আছে। আমরা অন্ধকারে আছি । মোবাইল বন্ধ , ফ্রিজের খাদ্য দ্রব্য নষ্ট হয়ে গেছে। যানবাহন গুলো অধিকাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্রিক চার্য দিতে না পারায় ইজিবাইকগুলো চালাতে পারছে না ফলে ওই সব চালকরা অলস সময় পার করছে। এছাড়া তাদের সংসার চালাতেও কষ্ট হচ্ছে।
এস.এস.সি পরিক্ষার্থী শিপ্রা বলেন, সামনে আমাদের পরীক্ষা। বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে ঠিক ভাবে পড়ালেখা করতে পারছি না। হারিকেন ও মোমের আলোতে বেশি সময় পড়া যায়না। এতে পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো নিতে পারছি না। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাশিয়ানী কার্যালয়ের সহকারি ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. আবু রায়হান বলেন, আমাদের এই এরিয়াতে ১৫০ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগের বাহিরে আছে । যে খুঁিটগুলো হেলে পড়েছে বা ভেঙ্গেছে তা ঠিক করতে একটু সময় লাগবে তবে আমরা বিকল্পভাবে ওই গ্রাহকদের সংযোগ দিতে পারবো ২-৩ দিনের মধ্যে । অন্যদিকে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এর আওতায় অধিকাংশ গ্রাহক রবিবার বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয় । বাকি গ্রাহকরা এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি। গোপালগঞ্জের ওজোপাডিকোর কর্মীরা অধিকাংশ গ্রাহদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া বাবদ ৪০০ থেকে ৬০ টাকা পযর্ন্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে।
গোপালগঞ্জের ইসলাম পাড়ার বাসিন্দা লাবনি বেগম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমার বাসা বিদ্যুতের তার ছিড়ে যায় । বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করলে মঙ্গলবার দুপুরে অফিস থেকে লোক পাঠায় । তারের উপর গাছের ডাল থাকায় তারা চলে যায় এবং বলে ওই ডালপালা সরিয়ে আমাদের ফোন দিবেন। আমরা অন্য লোক দিয়ে ডালপালা সরিয়ে ফোন করলে তার সংযোগ করে আমার কাছ থেকে ৪০০ টাকা নিয়েছে।
আমরাতো বিদ্যুৎ বিল দেই তাহলে লাইনের কাজ করার দায়িত্ব তাদের আমাদের কাছ থেকে কেন টাকা নিবেন ? এবিষয় জানতে চাইলে ওজোপাডিকো এর গোপালগঞ্জের প্রকৌশলী মো. মামুনুর রশিদ বলেন , অফিসের কোন লোক টাকা নিয়েছে
কিনা আমার জানা নেই। এটা বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট অন্য কোন ব্যক্তিরা এগুলো করতে পারে। তবে আমরা আগামি কালের,মধ্যে সবাইকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি। গোপালগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারি ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বিপুল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ঘূর্ণি ঝড় বুলবুলের কারনে বিদ্যুতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । আমাদের ১৪৭ টি খুঁিট ভেঙ্গেছে ।
এছাড়া ২৫ হাজার গ্রাহক সংযোগের বাহিরে রয়েছে । আমাদের কর্মীরা সকাল ৬ টা থেকে একটানা রাত ১০ পর্যন্ত কাজ করছে । আমরা ইতোমধ্যে ৯২ শতাংশ সংযোগ নিশ্চিত করেছি আশা করি আজকালের মধ্যে শতভাগ
সংযোগ দিতে পারবো