নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে ১৬ আসামিরই মৃত্যুদণ্ড

বাংলাদেশ

 

ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায়ে মূল হোতা অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ সকাল ১১টার দিকে রায় ঘোষণা শুরু করেন।

রায়ে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা ও মৃত্যুর ঘটনায় ১৬ আসামির অংশগ্রহণ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, ফাজিল শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন শামীম, নুর উদ্দিন, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সাবেক সহসভাপতি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি রুহুল আমিন, মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবসার উদ্দিন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদ আলম, মাদরাসার বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী হাফেজ আব্দুল কাদের, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, ইফতেখার উদ্দিন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, মো. শরিফ, আবদুর রহিম শরিফ, সাইফুর রহমান জোবায়ের ও জাবেদ হোসেন।

রায় ঘোষণার আগেই মামলাটির ১৬ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগেই রায় ঘোষণার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার মাধ্যমে অপরাধ ঘটার সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে মামলাটির।

ঘটনার মাত্র সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এবং মাত্র ৬১ কার্যদিবসে বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার বিষয়টিকে ‘নজিরবিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন ফেনী বারের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২৭ জুন থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ৯১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জন সাক্ষ্য দেন।

বাকি চারজনের মধ্যে একজন বিদেশে থাকায় এবং তিনজনের সাক্ষ্য অন্য সাক্ষীদের সঙ্গে পুরোপুরি মিলে যাওয়ায় তাঁদের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত ২৮ মে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.