ভৈরব থানায় সাংবাদিক প্রবেশে ওসি’র নিষেধাজ্ঞা ! একদিন পর দু:খ প্রকাশ।

বাংলাদেশ

শাহীন সুলতানা, দৈনিক আজকের মেঘনা কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানায় সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোখলেছুর রহমান। ঘটনার একদিন পর মঙ্গলবার রাতে পুলিশের পক্ষ থেকে দু:খ প্রকাশের মাধ্যমে সাংবাদিকদের সাথে বিষয়টি সমঝোতা করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ২১ অক্টোবর, সোমবার চিহ্নিত মাদক কারবারি ও পুলিশের কথিত সোর্স মুর্শিদকে ২০০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে ভৈরব থানার ওসি (তদন্ত) বাহলুল খান বাহার। আটকের পর ওই মাদক কারবারিকে লকাপে না রেখে ডিউটি অফিসারের রুমে রাখা হয়। স্থানীয় প্রভাবশালী ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতার তদবিরে আটকের কয়েক ঘন্টা পরে সোর্স মুর্শিদকে ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশ মাদক কারবারি সোর্স মুর্শিদকে আটক ও ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও তাঁর কাছে ইয়াবা পাওয়া যায়নি বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় তখন। আটককৃত সোর্স মুর্শিদকে ডিউটি অফিসারের রুমে বসিয়ে রাখার একটি ছবি স্থানীয় এক সাংবাদিক তাঁর মোবাইলে তোলার পর সোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে। এতে পুলিশের সাথে সাংবাদিকদের দূরত্ব বেড়ে যায়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভৈরব থানার ওসি সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভৈরব থানার ভিতরে ওসি অনুমতি ছাড়া সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটায় সময় টেলিভিশনের ভৈরব প্রতিনিধি মো: ফজলুর রহমান সহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক ভৈরব থানায় প্রবেশ করার সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। এসময় থানার দ্বায়িত্বরত সেন্ট্রি ও ডিউটি অফিসার এএসআই নাছির সাংবাদিকদের থানার ভিতরে প্রবেশ করতে না দিয়ে ওসি’র অনুমতি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক বিষয়টি কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারকে অবগত করলে পুলিশ সুপার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। পরে মঙ্গলবার রাতেই সাংবাদিকদের থানায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সমাধান হয়। এ ব্যাপারে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় বিষয়টি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে ভৈরব থানা পুলিশের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশও করা হয়েছে।
ভৈরব থানায় সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মোখলেছুর রহমান বলেন, আসলে সকল সাংবাদিকের জন্য নিষেধ দেয়া হয়নি, কিছু কিছু সাংবাদিকের জন্য নিষেধ করা হয়েছিল। ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাটির অবসান হয়েছে।
ভৈরব সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার রেজওয়ান দিপু সাংবাদিকদের বলেন, কিছু সাংবাদিকের সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মুলত সবার জন্য নিষেধাজ্ঞা না। ঘটনাটি মিমাংসা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভৈরব থানার কথিপয় অফিসারগণ নিরপরাধ ব্যক্তিদের আটক বাণিজ্যসহ মাদক দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে বিগত চার মাসে দুই এসআইকে ক্লোজ ও একজন এএসআইকে প্রথমে ক্লোজ করা হয়। পরে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার। তারপরও ভৈরব থানায় বন্ধ হয়নি আটক বাণিজ্য। মাদক কারবারি, ছিনতাইকারীসহ চিহ্নিত অপরাধীদের আটকের পর ছেড়ে দেয়ার ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে চুরি ছিনতাইসহ অপরাধ কর্মকান্ড ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ঘটনায় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কমনা করেন সাধারণ মানুষজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.