ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে শত শত যুবককে আট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর গত দুসপ্তাহে ব্যাপক ধরপাকড় করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, সেখানে কমপক্ষে চার হাজার লোককে বন্দী করা হয়েছে। কাশ্মীরি রাজনীতিবিদ শেহলা রশিদ দিল্লিতে একের পর এক টুইট করে বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা রাতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তরুণ যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি লিখেছেন, ‘তারা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করছে, খাবার ফেলে দিচ্ছে বা চালের বস্তায় তেল ঢেলে দিচ্ছে এবং শেষে বাড়ির যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, সোপিয়ানের একটি আর্মি ক্যাম্পে চারজন যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে জেরা ও নির্যাতন করার সময় তাদের সামনে মাইক্রোফোন ধরে রাখা হয়েছিল – যাতে তাদের চিৎকারের আওয়াজ শুনে গোটা এলাকা ভয় পায়। তবে আর্মি ক্যাম্পে কাশ্মীরি যুবকদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে তাদের চিৎকারের অডিও মহল্লায় শোনানো হয়েছে বলে শেহলা রশিদের দাবিকে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে। আর মিথ্যা রটানোর জন্য শেহলা রশিদের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ফৌজদারি মামলা দাবি করেছেন আইনজীবী অলক শ্রীবাস্তব।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঠিক দুসপ্তাহ আগের আর এক সোমবারে ভারতীয় পার্লামেন্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পর থেকে সেখানে এযাবত কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশাসন কখনোই স্পষ্ট করে কিছু বলেনি।
সরকারি মুখপাত্র নির্দিষ্টভাবে কোনও সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করলেও বার্তা সংস্থা এএফপি কাশ্মীরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে উদ্ধৃত করে বলছে, আটকের সংখ্যা কিছুতেই চার হাজারের কম হবে না। এএফপি দাবি করেছে, কাশ্মীরের জেলে আর জায়গা নেই বলে আটক বহু ব্যক্তিকে বাকি ভারতেও পাঠাতে হচ্ছে।
এদিকে জম্মু ও কাশ্মীরে সোমবার থেকে আবার স্কুল খোলার কথা থাকলেও বেশির ভাগ স্কুলই খোলেনি, বা খুললেও বাচ্চারা আসেনি। দুসপ্তাহ পরে আজ সরকার আবার জম্মু ও কাশ্মীরে সব স্কুল খোলার উদ্যোগ নিলেও সে চেষ্টা কার্যত ভেস্তে গেছে।
আর তাই কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলে প্রশাসন দাবি করলেনও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক দূরে। আর তারই মধ্যে শত শত যুবককে আটক করা বা তুলে নেওয়ার খবর যথারীতি আরও আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়াচ্ছে।