কৃষক তার পাকা ধানের ক্ষেতে আগুন দেন, খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’। খাদ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে দলের হুইপ ফেসবুকে লেখেন ‘আপনি কৃষকের সঙ্গে মশকরা করতে পারেন না’।
কৃষিমন্ত্রী যেনো অসহায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় ধান বেশি উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষক দাম পাচ্ছে না, এখন কিছু করারও নেই!
প্রয়োজনের তুলনায় বেশি উৎপাদন করে কৃষক কী ভুল করছেন, না অপরাধ করছেন?- প্রশ্নটা সামনে আসছে।
উৎপাদন বেশি হলে দাম কমে যায়। কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সেকারণে ধান বা অন্য ফসল সরকার কিনে মজুদ করে রাখে। প্রয়োজনে রপ্তানি করে। পৃথিবীর ধনী-গরিব সব দেশের সরকারই এ নিয়ম অনুসরণ করে। উৎপাদন খরচ হিসাব করে, কৃষকের কিছু লাভ নিশ্চিত করে দাম নির্ধারণ করা হয়। সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে।
সরকার এক মণ ধানের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করেছে ১,০৪০ টাকা।
চালকল মালিক সমিতি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র উল্লেখ করে প্রথম আলো সংবাদ প্রকাশ করেছে, এক মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৯৬০ টাকা। প্রতি মণ ধানে কৃষকের লাভ হওয়ার কথা ৮০ টাকা। যা নিতান্তই কম। কৃষকের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের শ্রম হিসেব করলে ১,০৪০ টাকায় এক মণ ধান বিক্রি করলেও কৃষকের লোকসানই হয়, লাভ নয়। কিন্তু, নির্মম বাস্তবতা বা রসিকতা হলো, প্রতি মণ ধানে কৃষকের লোকসান হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কারণ তাকে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মণ।
সরকারের ক্রয়নীতি ও এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনা যে কৃষকবান্ধব নয়, তা খুব বড়ভাবে দৃশ্যমান হয়ে পড়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলেও এই মুহূর্তে কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে দাম বাড়ানোর তেমন সুযোগ নেই।’ (দ্য ডেইলি স্টার, ১৮ মে ২০১৯)।
গত ১৫ মে একাত্তর টিভিতে তিনি প্রায় একই রকম কথা বলেছিলেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, সরকার তো দাম ১,০৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সরকার কেনো সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনছে না? কেনো মিল মালিকদের কাছ থেকে কিনছে? কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা সম্ভব নয়, এই যুক্তি দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী বললেন, ‘কীভাবে কৃষকের থেকে আপনি সরাসরি ধান কিনবেন? একটি উপজেলায় হয়তো এক হাজার টন চাল কিনবে সরকার। সেখানে কত চাষি…। সিলেকশন করবেন কীভাবে?’
মিল মালিকদের থেকে কেনো, কীভাবে ধান বা চাল কেনা হয়, কৃষিমন্ত্রী তাও বলেছেন।
এ যেন গ্রিক নাটকের সেই নিয়তি নির্ধারিত ট্রাজেডি ‘কিছুই করার নেই’!
কৃষিমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে যে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে বোঝা গেলো তা হলো, কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কোনো পরিকল্পনা সরকারের ছিলো না। এখনো নেই। ধানের ফলন আকস্মিকভাবে বা হঠাৎ করে ভালো হয়নি। ধান হঠাৎ করে আকাশ থেকে পড়েনি। কৃষকের শ্রমে-ঘামে ধান উৎপন্ন হয়েছে। ধানের ফলন যে ভালো হতে যাচ্ছে, কৃষক ও কৃষির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারো তা অজানা ছিলো না। সরকারের মজুদ করার ক্ষমতা কতো- তাও জানা। মজুদের জন্যে গুদামের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকা দরকার ছিলো। সরকার আগেও বলেছে, এখনো বলছে ‘গুদামের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে’। তাৎক্ষণিকভাবে কৃষককে রক্ষার জন্যে বেসরকারিখাতের গুদামের সহায়তা নেওয়া যায় কী না, তাও ভেবে দেখা হয়েছে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সৃজনশীল মানুষ কৃষক বিরতিহীনভাবে ধান-আলু-টমেটো… উৎপাদন করছেন। কিন্তু, ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। ন্যায্য মূল্য দেওয়ার পরিকল্পনাই সরকারি নীতিতে অনুপস্থিত।
ধান কিনে ভর্তুকি দেওয়ার যে হিসাব সরকার করেছে, তা কৃষকের জন্যে নয়। ধান কেনার ভর্তুকির টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে মিল মালিকদের জন্যে।
মিল মালিকরা ফরিয়াদের দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে ৪০০ বা ৫০০ টাকা মণ ধান কিনে, সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রে এনে ১,০৪০ টাকা মণ বিক্রি করছে। ফড়িয়া এবং মিল মালিকরা সব সময়ই সরকারি দলের লোক হয়ে থাকেন। রাষ্ট্রের ভর্তুকির টাকা কৃষকের নামে খরচ হলেও, পাচ্ছে ফড়িয়া-মিল মালিক তথা দলের নেতাকর্মীরা। কৃষিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে হবে এ কারণে যে, তিনি কোনো রকম রাখ-ঢাক না করে সত্যটা বলে দিয়েছেন।
২.
কৃষকের এই করুণ কাহিনির ভেতরে নানা রকমের তুলনামূলক হিসাব-নিকাশ চলছে। এক কেজি ধানের দাম ১২ টাকা, এক লিটার পানির দাম ২০ টাকা। এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫২৫ টাকা, এক মণ ধানের দাম ৪৫০-৫০০ টাকা। এক মণ ধান বিক্রি করেও কৃষক এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পারেন না। তুলনামূলক এই আলোচনায় ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে ‘বালিশ’ কেনা-উঠানোর হিসাব। ধান ও বালিশ- দুটি সংবাদ একই সময়ে সামনে এসেছে। দুটি সংবাদই মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছে। মানুষের ক্ষুদ্ধতার প্রকাশ ঘটেছে রসিকতায়।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টের কর্মকর্তাদের জন্যে আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে থাকবেন ৩৩০ জন রাশিয়ান নাগরিকও। তাদের জন্যে টিভি, ফ্রিজ, বিছানার চাদর থেকে শুরু করে বালিশ- সবই কেনা হয়েছে। এক-একটি বালিশ কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা দিয়ে। এক একটি ‘বালিশ’ ১৬-২০ তলা ভবনে তোলার জন্যে খরচ হয়েছে ৭৬০ টাকা। অর্থাৎ একটি বালিশের পেছনে রাষ্ট্রের খরচ হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। ৪৫০ টাকা মণ ধরে হিসাব করলে প্রায় ১৫ মণ ধানের দাম একটি বালিশের দামের সমান। একেকটি বিছানার চাদর কেনা হয়েছে ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা করে।
প্রথমে সংবাদটি একটি দৈনিকে প্রকাশিত হলে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। সত্যি একটি বালিশের দাম ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা? উপরে তোলার খরচ ৭৬০ টাকা? যেখানে বাংলাদেশের বাজারে এক হাজার টাকার মধ্যে ভালো মানের বালিশ পাওয়া যায়। শ্রমের মজুরিও কারও অজানা নয়।
বিষয়টি পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্যতা পেলো যখন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বালিশের দামের যৌক্তিকতা বোঝানোর চেষ্টা করলেন। মন্ত্রণালয়ও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তারাও সংবাদকর্মীদের বলেছেন- খবর নিয়ে দেখেন বাজারে এমন দামের বালিশ আছে।
পাঁচ-সাত হাজার টাকা দামের বালিশ বাজারে নেই, তা নয়। দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-মাসুম মোল্লা অনুসন্ধান করে লিখেছেন, বিশ্ব বাজারে ৫০ লাখ টাকা দামের বালিশও পাওয়া যায়। প্রশ্ন হলো, পাওয়া গেলেই বা থাকলেই কিনতে হবে? তাও জনগণের নামে ঋণ করে আনা টাকায়?
ধান এবং বালিশের দামের তুলনামূলক আলোচনায় নতুন করে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের সামগ্রিক খরচের বিষয়টি। রূপপুর প্রকল্পের যে দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা অতি ক্ষুদ্র অংশ। ২৫ কোটি টাকার কেনাকাটায় এমন ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র সামনে এসেছে।
পুরো প্রকল্পটির ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৯১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
১০ বছর পর থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিস্তি পরিশোধ করা শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকে।
মূল টাকার সঙ্গে বাড়তি সুদই পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৬৯ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট পরিশোধ করতে হবে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। ১৩ জন সচিব রাশিয়া থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে এসব তথ্য জানিয়েছিলেন ২০১৬ সালে। সেবছর ২৩ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠে রিপোর্ট করেছিলেন সাংবাদিক আরিফুজ্জামান তুহিন।
পৃথিবীর অন্যতম প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ পারমাণবিক বর্জ্য ও এর ব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশের পক্ষে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অসম্ভব। কারণ বাংলাদেশে এই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ তো দূরের কথা, সাধারণ পর্যায়ের লোকও নেই বললেই চলে। রাশিয়ান প্রযুক্তি-লোকবলও ঋণে তৈরি হচ্ছে রূপপুর প্রকল্প। পরে ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারত। রাশিয়া পারমাণবিক বর্জ্য নিয়ে যাবে, মৌখিক আলোচনা হলেও এখনো চুক্তি হয়নি। হলে নিঃসন্দেহে ঋণের টাকার পরিমাণ আরও বাড়বে।
ফলে পারমাণবিক ঝুঁকির বাইরেও দুর্নীতির বিষয়টি মানুষকে আতঙ্কিত করছে। প্রশ্ন এসেছে- মাত্র ২৫ কোটি টাকায় যদি দুর্নীতির চিত্র এমন ভয়াবহ হয়, তবে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটির ক্ষেত্রে চিত্রটা কেমন হতে পারে? প্রায় সব কিছুই তো রাশিয়া থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। সেই কেনাকাটার ক্ষেত্রে কী ঘটছে? দুর্নীতি হয়েছে বা হচ্ছেই বলা যাবে না। কিন্তু, ২৫ কোটি টাকার চিত্র সামনে আসার পর পুরো প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়।
এ কারণে প্রয়োজন স্বচ্ছতা। ঋণ চুক্তি থেকে কেনাকাটা তথা খরচের সামগ্রিক চিত্র জানার অধিকার দেশের মানুষের রয়েছে।
৩.
ধানের দাম থেকে বালিশের দাম। তার প্রেক্ষিতে এতো আলোচনা। বালিশের দাম কেনো এতো বেশি? তার একটি ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। নিউজবাংলা নামক একটি অনলাইনে ‘লেখক: প্রকল্পের বিশ্লেষক’ নামে একটি লেখা লিখেছেন। লেখাটির প্রসঙ্গত উল্লেখ করছি একারণে যে, সরকার সংশ্লিষ্ট অনেকে লেখাটি সামনে এনে বালিশের দামের যৌক্তিকতা বোঝানোর চেষ্টা করছেন।
সেখানে ‘প্রকল্পের বিশ্লেষক’ বুঝিয়েছেন, বালিশের দাম নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন তারা সরকারি ক্রয়নীতি না বুঝে-না জেনে সমালোচনা করছেন। তার বড় লেখার সরল ব্যাখ্যাটি দাঁড়ায় এমন, একটি টেন্ডারে টিভি, ফ্রিজ, খাট, গ্লাস… হয়ত এমন ১০টি জিনিস কেনার বাজেট ১০ লাখ টাকা। কোটেশনে মোট টাকার মধ্যে ১০টি জিনিসের দাম দেখানো থাকলেই চলবে। সেখানে একটি ফ্রিজের দাম ৫ হাজার টাকা, একটি পানি খাওয়ার গ্লাসের দাম ১০ হাজার টাকা দেখালে সমস্যা নেই। মোট টাকার পরিমাণ ঠিক থাকলেই হলো। হ্যাঁ, ক্রয়নীতিতে এমন ধারা আছে তা আংশিক সত্যি। সেখানে এও বলা আছে যে, বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দাম উল্লেখ করতে হবে। ‘প্রকল্পের বিশ্লেষক’ তা আড়াল করে গেছেন।
এবং আড়াল করেই ভয়াবহ অনিয়ম এই প্রক্রিয়াতে সংঘটিত হচ্ছে। সেদিকে যাওয়ার আগে বলে রাখি- বালিশের দাম বেশি দেখিয়ে টেলিভিশন বা অন্য জিনিসের দাম কম দেখানো হয়েছে, তা কিন্তু জানা যাচ্ছে না।
এবার আসি কেনো কোটেশনে ইচ্ছে মতো দাম কম-বেশি দেখানো হয়? বাংলাদেশে যতো প্রকল্প আছে, প্রায় সব প্রকল্পের বাজেট বারবার বাড়ানো হয়। কোটেশনের মূল্য তালিকার সঙ্গে বাজেট বাড়ানোর গভীর সম্পর্ক আছে। যারা কিনবেন আর যারা সরবরাহ করবেন, তাদের মধ্যকার হৃদ্যতাপূর্ণ ‘লেন-দেন’-এর সম্পর্কেই কর্মটি সম্পন্ন হয়।
প্রথমে হয়ত বলা থাকে গ্লাসের সংখ্যা ২০টি। পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গ্লাসের সংখ্যা আরও ৫০টি বাড়াতে হবে। সরবরাহকারীরা বাড়তি ৫০টি গ্লাস সরবরাহ করে প্রতিটি ১০ হাজার টাকা দাম ধরে। কারণ কোটেশনে প্রতিটি গ্লাসের দাম ধরা ছিলো ১০ হাজার টাকা।
‘প্রকল্পের বিশ্লেষক’ সত্য বলেছেন, সাধারণ মানুষ বা যারা সমালোচনা করছেন তারা ক্রয়নীতির এই কৌশল সম্পর্কে জানেন না, বোঝেনও না।
ঋণের টাকায় ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা দিয়ে যে একটি বালিশ কেনা যায়, তা ভাবার মতো সাহসই সমালোচক বা সাধারণ মানুষের নেই। কারণ হয়ত, সাধারণ মানুষ ও সমালোচকরা দেশটাকে নিজের মনে করেন।
৪.
সব কিছুর জন্যেই ছুটে যেতে হয় আদালতের কাছে, বালিশের দাম নিয়েও। যদিও কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্যের দাবি নিয়ে কেউ আদালতে যাননি।
ধানের উৎপাদন এতো বেশি হয়েছে সরকার তা স্বীকার করেও, ভারত থেকে চাল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। দুদিন আগে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে চাল আমদানি বন্ধ করা হবে। তারপর সংসদীয় কমিটি চাল আমদানি বন্ধের সুপারিশ করেছে। ধান-চালের ভরা মৌসুমে, মূল্য না পাওয়া কৃষকের আর্তনাদ-আহাজারির মধ্যে চাল আমদানি অব্যাহত থাকলো কেন? মন্ত্রী এখন বলছেন ‘প্রয়োজন’ হলে? ‘প্রয়োজন’ কী ধানের মৌসুম শুরুর আগেই হওয়া দরকার ছিলো না?
সরকারের কৃষিমন্ত্রী মুখে বলছেন, সুগন্ধি চাল আমদানি হচ্ছে। আর হিলি বন্দরের আমদানিকারকদের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ বলছেন, ‘ভারত থেকে এখন যে চাল আসছে তা আতপ। প্রতি কেজি ভারতীয় চালের দাম পড়ছে ২২ টাকা।’ তার মানে ভারত থেকে সাধারণ চালই বেশি আমদানি হচ্ছে। দেশের বাজারে চালের দাম কমেনি, ধানের দাম কমলেও। সরকার কিছু চাল রপ্তানি করতে চাইছে। কৃষক দাম পাচ্ছেন না এখন। কবে চাল রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত হবে, কবে আমদানি বন্ধ হবে… গল্প চলছে চ্যানেলে চ্যানেলে।
শায়েস্তা খাঁ’র আমলে টাকায় ৮ মণ চাল পাওয়া যেতো, এখন ১টি বালিশের দামে ১৫ মণ ধান পাওয়া যায়। মানুষের মনে হয়ত এই গল্পটিও স্থায়ী আসন করে নিবে। সূত্রে:- thedailystar