সিরাজগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মমিনের বিরুদ্ধে আরও দুই হত্যা মামলা

জাতীয়

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাঁতশ্রমিক ইয়াহিয়া আলী (৩৫) ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেনের (২২) নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মমিনের বিরুদ্ধে এনায়েতপুর থানায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলা দুটিতে ১৭৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার দুপুরে এনায়েতপুর থানার খুকনী ঝাউপাড়া গ্রামের নিহত ইয়াহিয়া আলীর স্ত্রী শাহানা খাতুন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মমিনসহ ৮৬ জনের নামে একটি হত্যার মামলা করেন। এই মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে মণ্ডল গ্রুপের পরিচালক আবদুল আলিম, এই গ্রুপের আরেক পোশাক কারখানার পরিচালক জোবায়ের মণ্ডলের নাম রয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা দুই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, শাহজাদপুর, চৌহালী, বেলকুচির বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে।

এনায়েতপুরের মাধবপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় এনায়েতপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা হযরত আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মমিনসহ ৮৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে।

মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বেলকুচি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাজ উদ্দিন, বেলকুচির পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান, সাধারণ সম্পাদক আজগার আলী, সহসভাপতি রাশেদুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে গত সোমবার এনায়েতপুরের বেতিল গ্রামের কলেজছাত্র শিহাব হোসেন (১৯) নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মমিন, তাঁর ভাই আবদুল আলীম, বেলকুচি পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হকসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।

 

ওই তিন মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক থেকে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল এনায়েতপুর হাটের আলহেরা মার্কেটের দিকে আসে। তখন আসামিরা বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুলিবর্ষণ ও হামলা চালায়। এ সময় তাঁতশ্রমিক ইয়াহিয়া আলী, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সিয়াম হোসেন ও কলেজ শিক্ষার্থী শিহাব হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীরা নিহত হওয়ার পর এনায়েতপুর থানায় হামলা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা থানায় ১৫ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।

এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসিবুল্লাহ হাসিব প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার থেকে এ পর্যন্ত তিনটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্রঃ প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.