বান্দরবানের থানচিতে সোনালী-কৃষি ব্যাংক ডাকাতিসহ পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র তাণ্ডবের ঘটনায় দীর্ঘ আড়াই মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার থেকে থানচি উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে নিরাপত্তার কারণে নাফাখুম, অমিয়খুম, আন্ধারমানিক, বড়মদক, ছোটমদকের মতো দুর্গম এলাকাগুলোতে ভ্রমণ করা যাবে না। তবে রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবত রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, রোববার থেকেই স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদিত পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াতে পারবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, হোটেল মালিক সমিতি এবং পর্যটক গাইড সমিতি প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শনিবার সকালে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও জানান, পর্যটকরা তিন্দুর বড়পাথর, রেমাক্রী জলপ্রপাত, তমাতুঙ্গী ও ডিম পাহাড় পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ করতে পারবেন। নিরাপত্তার কারণে এগুলোর বাহিরে অন্য স্পটগুলোতে যাওয়া যাবে না। গাইড সমিতির প্রতিনিধিদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পর্যটকরা কোথায় যেতে পারবে, আর কোথায় যেতে পারবে না।
থানচি পর্যটক গাইড শিমিয়ন ত্রিপুরা ও মংয়েসা মারমা বলেন, গত ৩ এপ্রিল থেকে প্রায় ৩ মাসের মতো সময় পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ ছিল। সংশ্লিষ্টদের সবার মতামতের ভিত্তিতে রোববার থেকে থানচি উপজেলার উল্লেখযোগ্য পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণকারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় যদিও থানচিতে পর্যটকের আগমন কম থাকে, তারপরও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় কিছুসংখ্যক পর্যটক হলেও থাকবে। এতে থানচি অচলাবস্থা তৈরি হওয়া পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বাণিজ্য কিছুটা হলেও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। যারাই ভ্রমণে আসুক আন্তরিকভাবে পর্যটকদের সেবা দেওয়া হবে।
এদিকে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র তাণ্ডব এবং কেএনএফ বিরোধী যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে নিরাপত্তা বিবেচনায় দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে বান্দরবানে রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি ও আলীকদম চারটি উপজেলা। পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় সব উপজেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারও করে নিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপরে হামলার ঘটনায় ফের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয় প্রশাসন।
জেলা আবাসিক হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন পর থানচি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় পর্যটকদের আগমন বাড়বে জেলায়। দীর্ঘ প্রায় তিন মাস ধরে রোয়াংছড়ি-রুমা উপজেলার পর্যটন স্পটগুলো নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রয়েছে। এতে জেলা সদরের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বাণিজ্যগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাখুম পর্যটন স্পটটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার দাবি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। সূত্রঃ যুগান্তর