অনুমোদনহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিলের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ডিগ্রিধারীরা। এই সনদ বাতিল করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আমলা, শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তারা বিপাকে পড়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এমন নির্দেশনা জারি করেছে।
জানা গেছে, আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া, ইউএসএসহ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নয় এমন দেশি-বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত পিএইচডি ডিগ্রির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই জানিয়ে গত ৭ মে ইউজিসি থেকে এক গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. ওমর ফারুক।
তথ্য মতে, সরকারি বিভিন্ন দফতর ও সংস্থায় কর্মরত বেশকিছু কর্মকর্তার এসব প্রতিষ্ঠান থেকে পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে। তারা এসব সনদ দিয়ে পদোন্নতিও পেয়েছেন। বর্তমানে ইউজিসি থেকে সতর্কবার্তা জারি করায় বিপাকে পড়েছেন তারা। তবে বিদেশ থেকে অর্জন করা পিএইচডি, এমফিল ও এমবিএ ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসিকে হস্তক্ষেপ না করতে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে হাইকোর্ট থেকে একটি রিট জারি করা হয়।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইউজিসি থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। একটি মহল স্বার্থ হাসিল করতে এমন কাজ করেছে। তাদের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলেও ইউজিসির এমন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তারা দ্বারে দ্বারে হেয় হচ্ছেন।
তারা আরও বলেন, ইউজিসির পরিচালনা আইন অনুমোদন দেয়া হয়েছে ২০১৪ সালে। আমরা তার অনেক আগে বিদেশ থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছি। পিএইচডি একটি গবেষণাধর্মী ডিগ্রি। অনেক পরিশ্রমের পর এ ডিগ্রি অর্জন করা যায়। অথচ উদ্দেশ্যমূলক এমন নির্দেশনা জারি করায় নানা ধরনের ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। বিদেশ থেকে শুধু পিএইচডি ডিগ্রি নয়, আরও বিভিন্ন ডিগ্রি করানো হচ্ছে। অথচ সেসব ডিগ্রির ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুক বলেন, কোনো উদ্দেশ্যমূলক নয়, ইউজিসির রুটিন কার্যক্রম হিসেবে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, যা বিগত সময়েও করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনুমোদনহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ডিগ্রি বাংলাদেশে গ্রহণ করা হবে না। বিজ্ঞপ্তিতে শুধু পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। নতুন করে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে, সেখানে সব ডিগ্রির বিষয়টি উল্লেখ থাকবে।
উচ্চ আদালতের রিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাইকোর্টের রিটের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। যদি এ ধরনের কোনো রিট জারি করা থাকে, তবে তা আমলে নিয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি। সূত্রে:- সময় টিভি