প্রায় বিশ-পঁচিশ বছর আগে কুলিয়ারচর – দ্বাঁড়িয়াকান্দি সড়কে নির্মিত বেইলি ব্রিজটি গত ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লেও সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি এখনো। কিছুদিন পূর্বে টেন্ডার হওয়ার কথা শুনা গেলেও এখনো ব্রিজটি নির্মাণ কাজে হাত দেয়নি কেউ । এই ব্রিজ নিয়ে ইতি পূর্বে বিভিন্ন গণ-মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের টনক নড়েনি। তাই এখনো সংস্কার কিংবা নতুন ব্রিজ নির্মাণ কাজে হাত দেয়নি কেউ। এতে করে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। ৩০ ফুট বেইলি ব্রিজটির বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে যাওয়ায় সাড়ে তিন হাজার জোড়া – তালির মাধ্যমে ব্যবহার করে আসলেও দূর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। বর্তমানে এটা ব্রিজতো নয় যেন মরণ ফাঁদ। এই মরণ ফাঁদে পরে দুর্ঘটনায় শনিবার (১০ অক্টোবর) সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামের এক চাউল ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা গেছে। নিহত সাইফুল ইসলাম কুলিয়ারচর পৌরসভা সদরের পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছোট ছেলে। নিহত সাইফুল ইসলাম ছিলো ৪ ভাই-বোনদের মধ্যে সবার ছোট। সে কুলিয়ারচর বাজারে চাউলের ব্যবসায় করতো। শনিবার সকালে ব্যবসায়ীক কাজে ৩ লাখ টাকা নিয়ে কিশোরগঞ্জ সদরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা হয়ে কুলিয়ারচর বাজার থেকে ভিবাটেক যোগে দ্বাঁড়িয়াকান্দি যাওয়ার পথে ভাটি-দোয়ারিয়া অবস্থিত বেইলি ব্রিজে গেলে দূর্ঘটনার শিকার হয়। তবে মৃত্যু পর তার সাথে থাকা ফোন ও টাকা কিছুই খোয়া যায়নি। ঘটনার সময় নিহত সাইফুলের সাথে থাকা বিভাটেক (মিশুক) রিকশার সহযাত্রী মো. অমরিত মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তারা দু’জন যখন বিভাটেক অটো রিকশা যোগে বেইলি ব্রিজটি পার হচ্ছিলো তখন হঠাৎ ব্রিজের ভাংগা গর্তে রিকশার চাকা ঢুকে যায়। এই সময় সাইফুল ইসলাম রিকশা থেকে ছিটকে নিচে পড়ে গেলে দ্বাঁড়িয়াকান্দি থেকে আসা একটি ট্রাক তার পিটের উপর দিয়ে যায়। ট্রাকের চাপায় সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়। তাৎক্ষনিক সহযাত্রী মো. অমরিত মিয়া সাইফুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় । সাইফুল ইসলামের অবস্থা আশংকাজনক দেখে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে প্রেরণ করেন । ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে ঘটনা স্থলে দূর্ঘটনার এমন কোন তথ্য না পাওয়ায় মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রহস্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সাংবাদিকগণ বেইলি ব্রিজের আশেপাশে থাকা বিভিন্ন দোকান ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানাতে পারে ওই বেইলি ব্রিজে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে তারা কেউ দেখিনি বা শুনেওনি। এমনকি কোনো একজন মানুষ এ ঘটনা দেখেছে এমন কোন তথ্যও তারা পাননি । এই নিয়ে স্থানীয় জনমনে রহস্যে দেখা দেওয়ায় ধ্রুমজালের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ কে এম সুলতান মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ রকম কোন তথ্য কিংবা অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আমরা এই বিষয়ে অবগত নই ।