দেশের আনাছে কানাছে এখন মাদকে ছেয়ে গেছে। হাত বাড়ালেই মাদক আর মাদক। মাদকের এ বিষাক্ত ছোবল থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করার অঙ্গীকার নিয়ে একঝাক সেচ্ছাসেবকসহ মাঠে কাজ করছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের তরুন ও সাহসী চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ শাহ আলম।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন আব্দুল হামিদ ভূইয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ শাহ আলম স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ উপজেলার পর্শ্চিম আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মৃত মিরাজ আলীর পুত্র কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মো. হানিফ মিয়া (৫০) কে আটক করে কুলিয়ারচর থানা পুলিশে সোপর্দ করে এখন প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়ে পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায ভুগছে।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ আলম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে কুলিয়ারচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরী নং -৯৩০।
সাধারণ ডায়েরীতে তিনি উল্লেখ করেন, উপজেলার পশ্চিম আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী মো. হানিফ মিয়াকে মাদকসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করায় হানিফ মিয়ার সালক উপজেলার পশ্চিম আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মৃত পাশ্বা মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী মো.খাইরুল ইসলাম ওরুফে ধন মিয়া (৪৬) গত ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার দিকে চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত ০১৭০৬৩৫৮৭৯৯ নম্বরে মো. খাইরুল ইসলাম ওরুফে ধন মিয়ার ব্যবহৃত ০১৭২২৩৮১২৫২ নম্বর থেকে মোবাইলে ফোন করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এর পর থেকে চেয়ারম্যান শাহ আলম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
থানায় সাধারণ ডায়েরী করার পর বৃহস্পতিবার (২৪সেপ্টেম্বর) বাদ আছর ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে এলাকাবাসী নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ওই চেয়ারম্যান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান জিলন, উপজেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মুক্তি মাহমুদ খোকা, ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল হক কাসেম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রেফায়েত উল্লাহ, ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম শহিদ, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মোছা. আকলিমা আক্তার, রাহাতন, ইউপি সদস্য হেদায়েত উল্লাহ ভূইয়া ও সাবেক ইউপি সদস্য মস্তোফা কামালসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকবৃন্দ।
এ সময় বক্তারা বলেন, অামরা যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মাদক মুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি তখন মাদক ব্যবসায়ীরা অামাদের প্রাণনাসের হুমকি দেয় যা মেনে নেওয়া যায় না। হানিফ মিয়ার শ্যালক প্রভাব শালী মাদক ব্যবসায়ী খায়রুল ইসলাম (ধন মিয়া) চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে প্রাণ নাশের হুমকি সহ বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে । খাইরুলের বিরুদ্ধে এর আগেও জাল স্ট্যাম্প, জাল টাকা ও মহাজনী সুদের ব্যবসাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তারা আরো বলেন, ব্লাংন্ক চেকে স্বাক্ষর নিয়ে টাকা সুদে লাগিয়ে পরবর্তীতে চেকে বেশী অংকের টাকা বসিয়ে চেকের মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানী করে আসছে সে।
জানা যায়, এর অাগে গত ফেব্রুয়ারী মাসে উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ী মো. হানিফ মিয়া (৫০) ও মো.খাইরুল ইসলাম ধন মিয়া (৪৫)’র বিরুদ্ধে নারী, মরণনেশা মাদক, জাল টাকা, জাল ষ্ট্যাম্প ব্যবসাসহ মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে এলাকার সাধারণ মানুষকে হয়রানী করা ও বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ করে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নিকট বিচার চেয়ে একটি লিখিত অাবেদন দাখিল করেন, উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আববাস উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল ওয়াহাব মাষ্টার, ইউপি সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. আলম মিয়াসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
দাখিলকৃত আবেদনের বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, র্যাব-১৪, সিপি-৩ ভৈরব এর কোম্পানী কমান্ডার ও কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত চিঠি প্রেরণ করেন কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী। যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। বিষয়টি এখনো আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা দেদারছে সমাজে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান।