বর্ষীয়ান আওয়ামীলীগ নেতা ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ধসঢ়;
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন। তাকে গোপালঞ্জ সদর উপজেলার কেকানিয়া গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে
বাবা-মায়ের কবরের পাশে বিকাল সাড়ে ৫টায় দাফন করা হয়। দাফনের আগে তাকে জাতীয় মর্যাদায়
গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এর আগে বিকাল ৫টায় সুলতানশাহী মাদ্রাসায় নামাজের জানাজা
অনুিষ্ঠত হয়। জানাজায় অংশ নেয় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান খান, জেলা আওয়ামীলীগের
সভাপতি চৌধুরী ইমদাদুল হক, সাধারন সম্পাদক মাহাবুব-আলী খান, পৌর-মেয়র কাজী-লিয়াকত
আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চুসহ জেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন
নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও জানাজায় প্রায় ৫শতাধিক লোক অংশ নেয়।
ধর্মপ্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ্ধসঢ়;র মৃত্যুতে গোপালগঞ্জের সর্বত্র শোকের
ছায়া নেমে আসে।
সকাল থেকেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, শুভাকাংখি ও স্বজনরা শহরের কলেজ রোডের তাঁর বাসভবনে এসে
খোঁজ খবর নিতে আসেন। কিন্তু বাড়িতে কেউ না থাকায় সেখানে কেউ অবস্থান করেননি।
রোববার সকাল ৮টায় ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর গোপালগঞ্জের বাড়িতে বসবাসকারি তাঁর অত্যান্ত স্নেহধন্য
দীপক সরকার (৩২) সাথে কথা হলে তিনি বলেন, রাতে মৃত্যুর খবর আসার পর থেকেই আমরা নির্বাক
হয়ে গেছি। শনিবার সকালে ফোনে মন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়। তখন তিনি তার শারীরিক অবস্থা
একটু খারাপ বলে জানান। ওই সময় তিনি আমাকে সবকিছু খেয়াল রাখার কথাও বলেন। এভাবে উনি
চলে যাবেন, তা বিশ্বাস করতেও হচ্ছে বলে কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন। দীপক সরকার আরও বলেন,
রাতেই মন্ত্রীর ছোট ভাই শেখ মোহাম্মদ আবু দাউদসহ নিকট আত্মীয়রা ঢাকার উদ্যেশে রওনা হয়ে
গেছেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর একান্ত সহকারি শেখ নাজমুল হক সৈকত বলেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল
থেকে ঘন্টাখানেকের মধ্যে শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত একটি এ্যাম্বুলেন্স যোগে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর মরদেহ
গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়। এর আগে সেখানে তার করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে
পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে তিনি কোন তথ্য দিতে পারেননি।
গোপালগঞ্জে পৌছে বাদ আসর সদর উপজেলার মধূমতি বিধৌত কেকানীয়া গ্রামে স্বাস্থ্য বিধি
মেনে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার মা-বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা
হয়েছে।
মৃত্যুকালে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ দুই স্ত্রী, ৯ মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন বলে তার পারিবারিক
সূত্রে জানা যায়।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর আস্থাভাজন দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহচর গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের
সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ রুহুল আমিন বলেন, শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ছিলেন আওয়ামীলীগের
মাঠের একজন ত্যাগী নেতা ও দুঃসময়ের কান্ডরী। আওয়ামীলীগের দুর্দিনে সকল লোভ, লালসার উর্ধ্বে
থেকে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন কর্মী হিসেবে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ
করে গেছেন। তার মৃত্যু গোপালগঞ্জের রাজনীতের বিশাল শুণ্যতা নেমে আসবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের বলেন, শেখ মোহাম্মদ
আব্দুল্লাহ-কে হারিয়ে আমরা হতবিহব্বল হয়ে পড়েছি। তিনি ছিলেন আমাদের নেতা ও অভিভাবক।
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘসময় তার সাথে আমার কাজ
করার সুযোগ হয়েছে। সুখে ও দুঃখে সবসময় পাশে পেয়েছি। পেয়েছি সহযোগিতা ও পরামর্শ।
আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ তার প্রতিক্রিয়ায়
বলেন, রাজনৈতিক কারনে ছোট বেলা থেকে শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-র সান্নিধ্য পেয়েছি। তিনি
ছিলেন দক্ষিণবঙ্গের আওয়ামীলীগের নেতা এবং একজন গুনী মানুষ। কোটালীপাড়ার রাজনীতে তার
অবদান আমরা সারাজীবন স্মরণ করব। মহান আল্লাহ তাল্লাহা এ মহান নেতাকে বেহেশত্ধসঢ়; বাসী
করবেন এ দোয়া করি।