এ কোন ধরনের ধান কাটা, জনসেবার নামে তামাশা ! সাধারণ মানুষ হতাশ।

জাতীয় টাঙ্গাইল

২৯ এপ্রিল ২০২০, টাঙ্গাইলে কৃষকের কাঁচা ধান কেটে বিতর্ক তৈরি করেছেন সংসদ সদস্য ছোট মণি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ধান কাটার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ছবিতে দেখা যায়, কাঁচা ধান দলবল নিয়ে কাটছেন এমপি। ছবি তোলার সময় অসহায়ের মতো সবকিছু তাকিয়ে দেখছেন জমির মালিক কৃষক। এভাবে এমপিকে কাঁচা ধান কাটতে দেখে অনেকে সমালোচনা করে লিখেছেন, কৃষকের ক্ষতিপূরণ এখন কে দেবে। জানা গেছে, ছাত্রলীগের ধান কাটা কর্মসূচি প্রশংসিত হওয়ার কারণে কিছু এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রী রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে দলবল নিয়ে বিভিন্ন ধান খেতে গিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিচ্ছেন। অনেক স্থানীয় পত্রিকা ও কিছু অনলাইন এ ছবিগুলো প্রকাশও করছে। এভাবে নামিদামি ব্যক্তিদের কান্ডকীর্তি কৃষকদের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের ভিতরেও সমালোচনা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এভাবে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো মানে নেই।

ছাত্রলীগ প্রথমে সঠিকভাবে মাঠে গিয়ে কাজ করেছিল, যা প্রধানমন্ত্রী নিজেও প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়াও গণমাধ্যমও ছাত্রলীগের প্রশংসা করে সংবাদ পরিবেশন করছে। এ বিষয়টি দেখার পরে অনেক রাজনীতিবিদ, এমপি ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধান কাটার ছবি তুলে ফেসবুকে দিতে শুরু করেছেন। ঢাকার কিছু নায়িকাকেও এ ধরনের কাজে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশিষ্ট কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, জনপ্রতিনিধিদের এ ধরনের কাজে আমরা হতবাক। এমন দুর্যোগের দিনে তাদের কান্ডজ্ঞানহীন কাজের নিন্দা জানানোরও রুচি হয় না। জনসেবার নামে তামাশা চলছে। তামাশা দেখছি কৃষকের ধান কাটা নিয়েও। জনসেবার নামে লোকদেখানো তামাশা জাতির বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলেছেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এ বিপর্যয়ের সময়ে সবাইকে প্রজ্ঞার সঙ্গে কাজকর্ম করা প্রয়োজন। ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে যে ভূমিকা রেখেছে, কৃষক লীগ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সেটি আমাদের অনুসরণ করা উচিত। কৃষকের ক্ষতি হয় এমন কোনো কাজ করে বাহবা কুড়ানোর সময় এখন নয়। এটা সবার স্মরণ রাখা উচিত।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মীজানুর রহমান বলেন, কিছু জনপ্রতিনিধির কান্ডজ্ঞানহীন কাজ মানুষকে লজ্জা দেয়। তারা যে আমাদের জনপ্রতিনিধি, এগুলো ভাবতেও লজ্জা হয়। তাদের এত নিচু ও নিম্নমানের কর্মকান্ড নিয়ে কথা না বাড়ানোই ভালো।

সূত্র: বা.প্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.