সব রাজনৈতিক কার্যক্রম বাতিল করে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম বানিয়ে বসে পড়লেন মমতা ব্যানার্জি আর রাজ্যবাসীকে দিলেন সতর্ক থাকার বার্তা।
‘আমি এখান থেকে বাইরে দেখছি, একদম অন্ধকার। বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আকাশ কালো হয়ে এসেছে। আমি সবাইকে বলবো, আপনারা খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না’, মমতা রাজ্যবাসীকে এসব কথা বলেন।
শুক্রবার সকালেই ঘণ্টায় প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে উড়িষ্যায় আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। হিন্দুদের ধর্মীয়স্থান পুরীতে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ছিলো চোখে পড়ার মতো। পুরী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকাতে সতর্কতার কারণে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে যথেষ্ট বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে কলকাতাসহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেও। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, এদিন বিকেলের পর থেকে এ রাজ্যে শুরু হবে ঝড়। তার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় ১১৫ কিলোমিটার। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিরও পূর্বাভাস রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছেন। রাজ্যের মানুষকে বিশেষ সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিপর্যয় মোকাবেলার জন্যে গঠিত দল ২৪ ঘণ্টা তৈরি রয়েছে বলে জানান মমতা।
পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, মন্দারমনি এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলো থেকে পর্যটকদের হোটেল খালি করার আদেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সরকারের বাসে করে পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর চব্বিশ পরগণা এবং নদিয়া হয়ে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে চলে যাবে, এমনটাই পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।
এছাড়া ফণীর প্রভাব পড়ছে অন্ধ্র প্রদেশ ও তামিলনাড়ুতেও। সব রাজ্যেই বিপর্যয় মোকাবেলার টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত দুর্যোগ চলবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়।
আগামী সোমবার ভারতে পঞ্চম দফার লোকসভা নির্বাচন। এর প্রস্তুতি ফণীর কারণে বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করেছে। রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভা ছিল। ফণীর কারণে সেই রাজনৈতিক কর্মসূচিও বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী।